নির্বাচনের আগে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ভ্রান্ত তথ্য: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘ভ্রান্ত তথ্য বা বিভ্রান্তি ছড়ানো এখন নির্বাচনের আগে আমাদের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।’ তবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দময় করতে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। এটি ছিল ঐক্য ও পরিবর্তনের প্রতি সম্মিলিত অঙ্গীকারের এক অনন্য মুহূর্ত, যা নির্বাচনের আগে পারস্পরিক বিশ্বাস গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
২১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোৎসে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন। সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। বুধবার (২২ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
বৈঠকের বরাত দিয়ে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত লোৎসকে বাংলাদেশে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং তার মেয়াদকালে বাংলাদেশ ও জার্মানির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকালে জার্মান রাষ্ট্রদূত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানান এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। ড. রুডিগার লোৎসে বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে দেখা সত্যিই উৎসাহব্যঞ্জক।’
রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোৎসে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালিত সংস্কার কার্যক্রম, বিশেষ করে জুলাই জাতীয় সনদের প্রশংসা করে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার টেবিলে বসতে এবং পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতে দেখা একটি ইতিবাচক পরিবর্তন। নির্বাচন পরবর্তীসময়েও এসব সংস্কার উদ্যোগ অব্যাহত থাকা উচিত।’
আলোচনায় রাষ্ট্রদূত জার্মানিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রদূত উভয়েই দুই দেশের জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে স্বাগত জানান। এসময় তারা বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি এবং এই ইস্যুতে জার্মানির সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইউরোপে জার্মানি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। আশা করি, নতুন রাষ্ট্রদূত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।
অধ্যাপক ইউনূস তরুণ প্রজন্মের শক্তি সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে আজকের তরুণরা সহজেই নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে, পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এবং অন্যায় চিনে ফেলতে পারে। তবে ভুয়া তথ্যের ঝুঁকি সম্পর্কেও সতর্ক করেন ড. ইউনূস।
এমইউ/এমএমকে/এমএস