বাউলশিল্পী আবুল সরকারের মুক্তি দাবি গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী ও অনুসারীদের ওপর হামলা এবং বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের সমাবেশ/ছবি: সংগৃহীত

বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেফতার এবং মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী ও অনুসারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য। সমাবেশ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগ বাতিলেরও প্রতিবাদ জানানো হয়।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির পক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জোটের সভাপতি মুফিজুর রহমান লালটু। তিনি অবিলম্বে বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, যে রাষ্ট্র নিজের সংস্কৃতির গভীর শিকড়—বাউল ঐতিহ্যকে দমন করে, সেই রাষ্ট্রের ভাঙন অনিবার্য হয়ে ওঠে। মাত্র পনেরো মাসে দেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও অস্থিরতা নতুন রূপ ধারণ করেছে।

তার অভিযোগ, বর্তমান শাসনামলে ইসলামোফ্যাসিস্ট শক্তির উত্থান অন্ধকারের মতো ঘন হয়েছে, আর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ছায়া আরও প্রবল হয়ে পড়েছে।

সমাবেশের বক্তাদের মতে, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান সংকট সাম্রাজ্যবাদ ও ধর্মান্ধ শক্তির বিরুদ্ধে মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।

সমাবেশে বক্তারা উল্লেখ করেন, ইউনুস-যুগে শতাধিক মাজার ধ্বংস হলেও রাষ্ট্র নির্বিকার থেকেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে বারবার। তারা স্মরণ করেন শেখ হাসিনার আমলের নাসিরনগর ও রামুর ঘটনা, ২০১১ সালের রাজবাড়িতে বাউল আখড়ায় হামলা, বাউল রীতা দেওয়ান ও শরিয়ত সরকারের গ্রেফতার, যখন তারা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। আজও তারা দাঁড়িয়েছেন বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে, মৌলবাদী বিদ্বেষের বিরুদ্ধে, সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব রক্ষার পক্ষে।

বক্তারা বলেন, যখন গণতান্ত্রিক পথ সংকুচিত হয়, তখন জনতার সঞ্চিত বেদনা অনিবার্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। তাদের মতে, বাংলাদেশ হয়তো আবারও এক পরবর্তী গণঅভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে—যেসব শক্তি মানবিক ইতিহাসের বিপরীত স্রোত বহন করে, তাদের বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধই হবে মানুষের জাগ্রত লড়াই।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের কোষাধ্যক্ষ দীনবন্ধু দাশ, মওলানা ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ থিয়েটারের দলপ্রধান খন্দকার শাহ আলম, সমাজচিন্তা ফোরামের আহ্বায়ক কামাল হোসেন বাদল, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সুস্মিতা রায় সুপ্তি, বাউলশিল্পী দেলোয়ার বয়াতি, যাত্রাশিল্পী পরিষদের সভাপতি বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন কবি হাসান ফকরি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সমাজ অনুশীলন কেন্দ্রের সংগঠক বিমল কান্তি দাশ।

এমডিএএ/এমএমকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।