দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বারা সরকারি সহায়তা পাবেন


প্রকাশিত: ০৬:৫৮ এএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

পাঁচ লাখ দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী সন্তানের মা যারা আর্থিকভাবে অচ্ছল তাদেরকে এখন থেকে নগদ অর্থ প্রদান করবে সরকার। দেশের রংপুর ও ঢাকা বিভাগের ৭টি জেলার ৪২টি উপজেলার ৪৪৩টি ইউনিয়নের ১৬ লাখ পরিবার থেকে এই ৫ লাখ দুস্থ মহিলা বাছাই করা হবে।

মূলত দরিদ্র মায়েদের দারিদ্র্য নিরসনের পাশাপাশি তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়টি নিশ্চিত করতেই সরকার এ নগদ অর্থ প্রদানের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। একনেক সভায় `ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্যা পুরেস্ট (আইএসপিপি)` নামক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী এতে সভাপত্বি করেন।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে ব্যয় হবে ২ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিবে ৩৮ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বিশ্বব্যাংক ঋণ সহায়তা দিবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ এপ্রিল ২০১৫ থেকে জুন ২০২০ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করবে।

প্রকল্প এলাকা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর দরিদ্রতা ম্যাপকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে একনেক পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহ এই সাত জেলায় দারিদ্র্যের হার ৩৫ ভাগেরও বেশি। সেইসাথে এখানে অপুষ্টির হারও দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। প্রকল্প এলাকা বাছাইয়ে এ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তবে পর্যায়ক্রমে দেশের ৬৪টি জেলাকেই এ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এ প্রকল্পের আওতায় নগদ অর্থ কীভাবে বিতরণ করা হবে তা নিয়ে বলতে গিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এ সময় বলেন, দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের গর্ভকালীন মোট ৪ বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। প্রতিবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যে তাদেরকে ২০০ টাকা করে নগদ অর্থ দেয়া হবে। অপরদিকে শূন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী দরিদ্র শিশুদের প্রতিমাসে একবার শরীর বৃদ্ধির পরীক্ষা করে নগদ ৫০০ টাকা প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৬০ মাস বয়সী শিশুদের তিন মাসে একবার শরীর বৃদ্ধির পরীক্ষা করে নগদ ১০০০ টাকা দেয়া হবে।

এছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও মায়েরা প্রতিমাসে অনুষ্ঠিত শিশু পুষ্টি ও উন্নত শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করলে প্রতিবার ৫০০ টাকা করে পাবেন বলেও পরিকল্পনা মন্ত্রী উল্লেখ করেন। মন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিশু ও নারী মৃত্যুহার যেমন হ্রাস পাবে একই সাথে শিশু ও নারী পুষ্টিও নিশ্চিত হবে।

এদিকে সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও গাজীপুরের ৮টি উপজেলায় গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য আজকের একনেক সভায় ৯৭৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪৬৫ কোটি টাকা। প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ৫০৭ কোটি টাকা দিবে। বাকি ৭ কোটি সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৬৬ কি.মি. দীর্ঘ পাইপ লাইন নির্মাণ করা হবে। এর ফলে বিদ্যমান ও নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সারকারখানা ও অন্যান্য শিল্প কারখানায় নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকবে বলে একনেক সভায় জানানো হয়। গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পিনি লিমিটেড (জিটিসিএল) জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০১৯ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করবে।

প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজকের একনেক সভায় মোট ৪৪৯০ কোটি টাকার ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৬`শ ৩৬ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৮`শ ৪৭ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৭ কোটি টাকা। অনুমোদিত ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন ও ২টি পুরাতন।

এসএ/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।