এক মিনিটের পথ দুই ঘণ্টায়!
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অন্যতম একটি ব্যস্ত সড়ক কুড়িল বিশ্ব রোড়-প্রগতি সরণি (বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম সড়ক)। ব্যস্ততম এই সড়কে রিকশা থেকে শুরু করে চলে দূরপাল্লার বাস। কিন্তু প্রতিনিয়ত যানজটে নাকাল এই রোডের যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় তাদের। রাস্তাতেই নষ্ট হচ্ছে তাদের মূল্যবান সময়।
রাস্তার এ বেহাল দশার কারণে বুধবার সন্ধ্যায় মাত্র ১ মিনিটের পথ (রেডিসন হোটেল-মাছরাঙা টিভি) পাড়ি দিতে এক বাস যাত্রীর সময় লেগেছে প্রায় দুই ঘণ্টা।
ভুক্তভোগী ওই যাত্রীসহ অনেকে জানান, রাজধানীর রেডিসন হোটেল থেকে মাছরাঙা টেলিভিশন পর্যন্ত (এক মিনিটের পথ) অতিক্রম করতে সময় লেগে যায় দুই ঘণ্টা। কারণ এক ধাপ এগুলো আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলো বাস। শুক্রবার থেকে রমজান শুরু হওয়ায় এমন যানজট বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুধু ওই রাস্তা নয়। সরেজমিন ঘুরে রাজধানী জুড়েই এ দৃশ্য দেখা গেছে। শাহজাদপুর থেকে গুলশান-১ যেতে এবং মধ্য বাড্ডা থেকে গুলশান-২ যেতে দুটি প্রশস্ত সংযোগ সড়ক রয়েছে। এছাড়া প্রগতি সরণির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বেশ কয়েকটি গলি। পুরো বাড্ডা এলাকাজুড়ে যে সব সরু গলি রয়েছে সে গুলোর মুখ বের হয়েছে এ সড়কে। আশেপাশের গলি থেকে রিকশা বা অন্য গাড়ি বের হয়ে রাস্তা পার হচ্ছে। তবে এখানে নেই কোনো সিগন্যাল। আবার প্রতি গলি অনুযায়ী ট্রাফিক দেয়াও সম্ভব নয়। ফলে বাসচালক থেকে শুরু করে ভ্যানচালক, সবারই আগে যাওয়ার প্রবণতা। এর ফলে সবসময়ই লেগে থাকে যানজট।
ব্যস্ত এই সড়কে সব ধরনের বাহন চলাচল করে। দূরপাল্লার বড় বাস, যাত্রীবাহী ছোট বাস, প্রাইভেট গাড়ি, পিকআপ, রিকশা, ভ্যান এবং ঠেলা গাড়ি। ফলে যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না।
যানজটে বসে থাকা তুরাগ বাসের চালক ইব্রাহিম জাগো নিউজকে জানান, আগে কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে বসুন্ধরা পর্যন্ত যানজট ছিল। কিন্তু বসুন্ধরার ইউটার্ন বন্ধ করে দেওয়ায় এখন যানজট হয় উত্তর বাড্ডা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত। ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এই রাস্তা পাড় হতে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ লাগার কথা। কিন্তু এখন সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। কোনো সময় দুই ঘণ্টাও লেগে যায়।
তিনি আরো বলেন, মধ্য বাড্ডা থেকে রামপুরা ব্রিজ পার হতেই আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে। যানজটের কারণ হিসেবে সংযোগ সড়ক, ইউটার্ন আর ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়াকেই দায়ী করলেন এই চালক।
চাকরিজীবী মোহাম্মদ মানিক বলেন, সব সময় এই রোড়ে যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে মধ্য বাড্ডা গুলশান লিংক রোড থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত। প্রতিদিন যানজটের কারণে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্রিজ পর্যন্ত হেঁটে যেতে হয়। আর বিভিন্ন দোকানের সামনে ফুটপাত দখল থাকায় হাঁটতেও সমস্যা হয়। বাধ্য হয়ে ফুঁটপাত রেখে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। কোনো জরুরি কাজ থাকলেও যানজটের কাছে অসহায় আমরা নগরবাসী।
একে/পিআর