সাংবাদিককে মাদকাসক্ত বলে গালমন্দ ঢামেক চিকিৎসকের!


প্রকাশিত: ০২:৪৫ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৫

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এক চিকিৎসকের রোষানলে পড়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময় ডট কমের স্টাফ রিপোর্টার রিকু আমির। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেখে উচ্চস্বরে চিৎকার করে মাদকাসক্ত বলে গালমন্দ করেন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে আনসার ডেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন তিনি। সেখানে কর্তব্যরত নার্স ও ওয়ার্ডবয়রা এ সময় কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে যান। চিকিৎসকের এহেন আচরণে হতবাক বনে যান রিকু আমির। চিকিৎসককে কিছু না বলে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেল পৌণে ৩টায় নিউরোসার্জারি বিভাগের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে। জানা গেছে, হেনস্থার শিকার সাংবাদিক রিকু আমির শনিবার হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমানের কাছে ডা. পীযুস কান্তি মিত্র নামের ওই চিকিৎসকের দুর্ব্যবহারের ঘটনা অবহিত করে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

লিখিত অভিযোগে রিকু আমির বলেছেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য বৃহস্পতিবার বিকেল পৌণে ৩টায় ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে যান। এ সময় তার সহকর্মী মাসুদ আলম তার সঙ্গে ছিলেন। কাজ শেষে ফেরার সময় তার পূর্ব পরিচিত সিনিয়র নার্স আসাদুজ্জামান জুয়েলের সঙ্গে দেখা হলে তিনি ওয়ার্ডের এক পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় ডা.পীযুষ কান্তি মিত্র এগিয়ে এসে তাকে দেখা জুয়েলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এই মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে কেন এখানে নিয়ে এসেছো। তুমি তো মানুষ চিনতে ভুল করেছো। সে ইনজেক্টিং ড্রাগ ব্যবহার করে। তাকে এই ওয়ার্ড থেকে বের করে দাও। সে কিসের সাংবাদিক, এখানে সাংবাদিক ডিজএলাউ।’ নার্স নম্রস্বরে কারণ জানতে চাইলে সে আশরাফুল নামে একজন আনসার সদস্যকে ডেকে চড়া মেজাজে বলেন, এই মাদকাসক্তকে ঘাড় ধরে বের করে দাও। এ সময় তিনি কিছু না বলে সহকর্মীকে নিয়ে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে আসেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে রিকু আমির বলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতবাক ও বিস্মিত হয়ে পড়ি। তিনি কেন আমাকে মাদকাসক্ত বলে গালমন্দ করলেন তা বোধগম্য নয়।

সেদিন ওই ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স আসাদুজ্জামান জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন চিকিৎসক কেন তার সাথে এমন র্দুব্যবহার করলেন তা একেবারেই বুঝতে পারিনি। ঘটনাটি দুঃখজনক।

তবে শনিবার সন্ধ্যায় ডা. পীযুষ কান্তি মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই সাংবাদিক ছুটির দিনে ওয়ার্ডে ঢুকে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে মিথ্যা প্রতিবেদন তৈরি করেন। রোগীদের সঙ্গে মোটা অংকের টাকার চুক্তিতে ডাক্তার নার্সদের হেয় প্রতিপন্ন করে প্রতিবেদন লিখেন।

তবে সেদিন তাকে আনসার ডেকে বের করে দেয়ার কথা স্বীকার করলেও তাকে মাদকাসক্ত বলে গালিগালাজ করেননি বলে দাবি করেন ডা.পীযুষ কান্তি মিত্র।

এদিকে তার বিরুদ্ধে রোগীদের জিম্মি করে ওয়ার্ড থেকে রোগী ভাগিয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, তিনি ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেটও লিখে থাকেন বলে প্রচার রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা.পীযুষ বলেন, এই ওয়ার্ডে সিএ’র দায়িত্বপালনকালে রোগীর প্রয়োজনে মেডিকেল সার্টিফিকেট লিখলেও কখনো মিথ্যা সার্টিফিকেট লিখেননি।

এমইউ/আরএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।