‘বোকা’ শিকারে তিনি কখনো জাহাজের মাস্টার কখনো ক্যাপ্টেন!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ১০ মে ২০২০

কখনো নিজের পরিচয় দিতেন জাহাজের মাস্টার আবার কখনো ক্যাপ্টেন। এই পরিচয়ে কম দামে জাহাজী আসবাব পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখাতেন। যারা এই প্রতারণার জালে আটকা পড়তেন, তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিতেন তিনি। প্রায় ১৫ বছর ধরেই চট্টগ্রাম নগরে এমন প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। অবশেষে ধরা পড়তে হলো তাকে। নাম তার মিজু মিয়া (৪৫)।

শনিবার (৯ মে) রাতে নগরীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে মিজু মিয়াকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জাহাজের মালামাল পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে বহুজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক মিজু। সবশেষে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

মিজু মিয়া গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি থানার ফুকরা এলাকার মৃত সায়েদ মিয়ার ছেলে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মিজু মিয়া গত ১৫ বছর ধরেই শহরের মানুষদের ঠকিয়ে আসছেন। তিনি এক সময় গোপালগঞ্জে থাকতেন, সে সুবাদে সেখানকার পথঘাট তার চেনা। চট্টগ্রামে তিনি নিজেকে কখনো জাহাজের মাস্টার আবার কখনো ক্যাপ্টেন পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। গোপালগঞ্জের মানুষ পেলে তাদের দেশি মানুষ পরিচয় দিয়ে সম্পর্ক পাততেন। পরে কম দামে জাহাজি আসবাব পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখাতেন। টাকা হাতে এলেই গাঢাকা দিতেন তিনি।’

ওসি জানান, গত বছরের আগস্ট মাসে শাহীন মোল্লা নামে এক শিক্ষার্থীর কাছে নিজেকে জাহাজের মাস্টার বলে পরিচয় দেন মিজু মিয়া। এসময় তার কাছে কিছু সেগুন কাঠ, বিদেশি টিভি, ফ্রিজ, লেটেস্ট মডেলের আইফোন, ল্যাপটপ আছে বলে জানিয়ে বিক্রির ইচ্ছা পোষণ করেন মিজু। ওই শিক্ষার্থী দুই লাখ টাকায় সেসব কিনতে আগ্রহী হন। তিন বন্ধু মিলে মিজুকে এক লাখ টাকা দেন। কিন্তু ওই মাসের ৩ তারিখ মালামাল দিয়ে বাকি এক লাখ টাকা দেয়ার কথা থাকলেও সেদিন থেকে মিজু গাঢাকা দেন।

ওসি আরও জানান, গতকাল শনিবার (৯ মে) রাতে নগরীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে মিজু মিয়াকে ওই যুবকরা শনাক্ত করতে সমর্থ হন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করলে কোতোয়ালি থানায় তাকে নিয়ে আসা হয়। এসময় নিজের প্রতারণার কথা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেন মিজু।

মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘মিজুকে থানায় আনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই আমাদের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের এসএফ শাখার এক নায়েক ও সদরঘাট থানার এক এসআই থানায় এসে হাজির। তারাও অভিযোগ করেন, এই মিজু সেগুন কাঠ, বিদেশি টিভি, ফ্রিজ, লেটেস্ট মডেলের আইফোন, ল্যাপটপ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাদের কাছ থেকে।’

তিনি বলেন, ভুক্তভোগীরা মিজু মিয়ার নামে প্রতারণার মামলা করেছেন। মামলাটি আমলে নিয়ে রোববার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আবু আজাদ/এইচএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।