করোনার ‘সেকেন্ড ওয়েভ’-এর শুরু বোঝা যাবে যেভাবে
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ( সেকেন্ড ওয়েভ) এর বিস্তার রোধে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কোভিড-নন কোভিড রোগীকে সুযোগ করে দিতে প্রয়োজনীয় এবং মনিটরিং জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়। এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরকে জেলা ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে রোগীরা ভর্তি হতে পারছেন কি না, চিকিৎসা নিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, তা কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গত ৫ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মনিটরিং,স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান অধিশাখার যুগ্মসচিব মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত ‘কোভিড-১৯এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও মোকাবিলা সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন’ শীর্ষক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ চলছে। প্রথম দফার পর আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমে গেলেও সেকেন্ড ওয়েভের সময় আবারও নতুন করে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। সে হিসেবে শীতকালে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়ে বাংলাদেশেও একই পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ঘরের বাইরে কোথাও বের হলে মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই বার বার সতর্ক করলেও জনগণের মধ্যে খুব একটা সচেতনতা পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যু ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হবে কবে? কীভাবে বিষয়টি বোঝা যাবে?
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা.মোশতাক হোসেনের কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘গত এক-দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে। মার্চের পর থেকে ক্রমান্বয়ে শনাক্ত রোগীর হার প্রায় দ্বিগুণ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আক্রান্ত ও মৃতের হার কমতে থাকে এবং দীর্ঘসময় পর্যন্ত অবস্থা স্থিতিশীল থাকে। সে হিসেবে প্রথম পর্য়ায়ের করোনার ঢেউ নেমে গেছে বলা যায়।’
‘এখন যদি নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি হয় এবং চার সপ্তাহেরও বেশি সময় পর্যন্ত শনাক্তের হার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে যে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়ে গেছে।’
দেশব্যাপী মানুষের মাস্ক না পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার প্রবণতা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দেশে গত ৮ মার্চ প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। ৮ নভেম্বর পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৬৭ জনের। এদের মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ৬৭১ জন ও এক হাজার ৩৯৬ জন নারী।
এমইউ/এসএস/জেআইএম