এলাকাভেদে ‘স্মার্ট লকডাউন’ চায় হেলদি বাংলাদেশ
করোনা সংক্রমণের হার ও মাত্রাভেদে সারাদেশকে একসঙ্গে লকডাউনের আওতায় না আনার পক্ষে মত দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠন ও পেশাজীবীদের জোট হেলদি বাংলাদেশ। তাদের মতে, উচ্চ সংক্রমণ এলাকার কথা বিবেচনা করে নির্দিষ্ট স্থানে লকডাউন দেয়া যেতে পারে। তারা এ ব্যবস্থাকেই বলছে ‘স্মার্ট লকডাউন’।
করোনা সংক্রমণ কমাতে হেলদি বাংলাদেশের আহ্বায়ক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান সোমবার (১২ এপ্রিল) এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে স্মার্ট লকডাউনসহ সরকারকে পাঁচটি করণীয় কার্যকর করার প্রস্তাব করেছেন।
এই করণীয়গুলোর একটিতে হেলদি বাংলাদেশ বলছে- প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিধিনিষেধসংক্রান্ত বার্তা দেয়া দরকার, যার দুটি দিক থাকবে—বিশ্বাসযোগ্যতা ও সুস্পষ্টতা। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার ভার শুধু জনসাধারণের ওপর ছেড়ে না দিয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্ব সরকারকে নেয়ার প্রস্তাব করা হয়।
করোনার এই কঠিন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়বদ্ধতা আছে উল্লেখ করে হোসেন জিল্লুর বলেন, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার সংকট আছে। সেগুলো নানা কারণে হয়েছে, সেটা বিশ্লেষণ করা জরুরি।
সংক্রমণ রোধে পাঁচটি করণীয় ছাড়াও হোসেন জিল্লুর রহমান তিনটি সত্যকে স্বীকার করা জরুরি বলে মনে করেন।
প্রথমত, এক বছর করোনার ছায়ায় থাকতে থাকতে জনগণ ও সরকারের মধ্যে ক্লান্তি চলে এসেছে। এমনকি কোভিড নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সরকারের বিভিন্ন নীতির মধ্যে গুরুত্বের দিক দিয়ে নিচের দিকে চলে এসেছে বলেও মন্তব্য হোসেন জিল্লুর রহমানের।
দ্বিতীয়ত, ২০২০ সালে সংক্রমণের শুরুতে ভাইরাস সম্পর্কে জ্ঞান কম থাকার কারণে দুশ্চিন্তা হলেও এবার ‘সক্ষমতার ঘাটতি’র কারণে দুশ্চিন্তা কাজ করছে। হোসেন জিল্লুর বলেন, হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। এগুলোতে প্রস্তুতি দুর্বল পর্যায়ের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপরও এর দায় বর্তায়। এখনো স্বাস্থ্য খাতে নানা দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠে আসছে।
তৃতীয় সত্য হিসেবে বলা হয়, দেশের ৫০ বছরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিতে স্থানীয় পর্যায়ের অন্তর্ভুক্তি থাকলেও কোভিড নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটির লোকজনের অন্তর্ভুক্তির চেয়ে ‘আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা’ বেছে নেয়া হয়েছে। হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। মন্ত্রণালয়গুলোই সিদ্ধান্ত নেয়ার জায়গায় থেকেছে। যে সংক্রামক ব্যাধি আইন করা হয়েছে, সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপকদের ক্ষমতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, সংক্রামক ব্যাধি আইন, ২০১৮ একপাশে ফেলে রাখা হয়েছে। তবে এসব স্বীকার করে কার্যকর নতুন পন্থা নিতে হবে।’
এমআরআর/এএসএম