দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতালের উদ্বোধন রোববার
আগামী রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীতে দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল উদ্বোধন করা হবে। এক হাজার বেডের এই হাসপাতালের নাম দেয়া হয়েছে ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’। এখানে ১০০ শয্যার আইসিইউ এবং ১১২টি এইচডিইউ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া রোগীদের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থাও রয়েছে।
হাসপাতালে এখন চলছে ধোয়া-মোছার কাজ। রোববার উদ্বোধনের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসা দেয়া শুরু হবে। তখন এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশনের (ডিএনসিসি) মহাখালী কাঁচাবাজারের (ছয় তলা) এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা ভবনে এই হাসপাতাল চালু করা হচ্ছে। এতদিন মার্কেটটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন করোনা হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হলেও পৃথকভাবে ওই সেবা কার্যক্রমগুলো চলবে।
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, মহাখালী কাঁচাবাজারের জন্য নির্মিত ছয় তলা ভবনটিতে ওই হাসপাতাল স্থাপনের কাজ চলছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় তলায় স্থাপন করা হয়েছে জরুরি বিভাগ। এই বিভাগে ৫০টি শয্যা রয়েছে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম তলার দোকানগুলোতে দুটি করে শয্যা বসানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি ফ্লোরের ফাঁকা জায়গায় কাঁচ দিয়ে বড় একটি কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এই কক্ষটিতে ২৫টি শয্যা রয়েছে। এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ছয় তলায় পৃথক কয়েকটি কক্ষ নিয়ে আইসিইউ এবং এইচডিইউ শয্যা স্থাপন করা হয়েছে। এখন এই দুটি বিভাগে ধোয়া-মোছার কাজ করছেন কর্মীরা। তা তদারকি করছেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে ৫০০ চিকিৎসক, ৭০০ নার্স, ৭০০ স্টাফ এবং ওষুধ, সরঞ্জামের ব্যবস্থা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে শতাধিক চিকিৎসক ও দুই শতাধিক নার্স কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকিরা শনিবারের মধ্যে কাজে যোগ দেবেন। তবে হাসপাতালটি পরিচালনা করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
জানতে চাইলে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগামীকাল শনিবার (১৭ এপ্রিল) হাসপাতালটি উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্তু কিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে। আশা করি রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালটি উদ্বোধন করতে পারব। তবে এই হাসপাতালে আপাতত শুধু করোনা চিকিৎসা দেয়া হবে। এখানে কোনো অপারেশন করা হবে না। অনেক করোনা রোগীর ডায়ালাইসিস করা লাগে। তাদের জন্য আইসিইউ বিভাগে চারটি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
পর্যাপ্ত জনবল এবং ওষুধ ছাড়া কিভাবে রোববার হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আশা করি শনিবারের মধ্যে পর্যাপ্ত জনবল ও ওষুধ পাব। ইতিমধ্যে যে পরিমাণ জনবল পেয়েছি, তাদের সঙ্গে দফায় দফায় সভা করা হচ্ছে। তাদের নিজ নিজ কাজ বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্টরা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছেন।’
গত বছরের ৯ আগস্ট করোনা আইসোলেশন সেন্টার পরিদর্শনে গিয়ে মহাখালীর এই মার্কেটটিকে ৫০০ শয্যার আরবান (নগর) হাসপাতালে রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছিলেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘৭ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ডিএনসিসি মার্কেট মূলত পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এটি বাস্তবায়ন করা যায়নি। এখন এটিকে কিভাবে আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করা যায়, আমরা তার পরিকল্পনা করছি। এই ভবনকে আমরা যদি আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করতে পারি, তাহলে নগরবাসীর জন্য অনেক সুবিধা হবে।’
এমএমএ/এমএইচআর/এএসএম