‘বেলা বাজে ১২টা, এখনও বিসমিল্লাহ করতে পারি নাই’
আজিমপুর কবরস্থানের দেয়াল ঘেঁষে ফুটপাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো কয়েকটি ভ্যানে সাজানো ফজলি আম। কিন্তু ভ্যানের সামনে ক্রেতা-বিক্রেতা কিছুই নেই। রাস্তাঘাটও বলতে গেলে প্রায় জনশূন্য। দু-চারটি খালি রিকশা দ্রুতগতিতে ছুটে যাচ্ছে নীলক্ষেত অভিমুখী রাস্তায়।
একটি ভ্যানের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দূর থেকে ছুটে এসে এক যুবক বলে উঠলেন, ‘স্যার, ভালো ফজলি আম উঠাইছি। কেজি পাঁচেক দিয়া দেই?’
এ সময় গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় শুনে বিক্রেতা হতাশ হন। সোমবার মধ্যদুপুরে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সালাম নামের ওই আম বিক্রেতা বলেন, ‘লকডাউনে রাস্তায় লোকজন বের হতে ভয় পাচ্ছে। এ কারণে বিক্রি অনেক কম। লকডাউনের আগে প্রতিদিন গড়ে তিন মণ আম বিক্রি হলেও এখন তা অর্ধেকের কমে নেমে এসেছে।’
পাশেই ভ্যানে আম সাজিয়ে রাখছিলেন মোহিত নামের আরেক আম বিক্রেতা। বেচাকেনা কেমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলে উঠলেন, ‘বেলা বাজে ১২টা। এখনও বিসমিল্লাহ করতে পারি নাই। বেচাকেনার কথা আর কি কমু!’

করোনাভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতিতে সালাম ও মোহিতের মতো ফুটপাতের দোকানিদের কপাল পুড়েছে। কয়েক দিন আগেও আমের জমজমাট বিক্রি থাকলেও লকডাউন শুরুর পর বিক্রি কমতে থাকে। ১ জুলাইয়ের আগের তিনদিন বেচাকেনা কিছুটা হলেও এখন বিক্রি আরও কমেছে।
আম বিক্রেতারা জানান, কিছু ক্রেতা এলেও তাদের পুলিশ নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে। তাই দুয়েকদিন যারা এসেছিল তারাও আর আসে না।
তবে করোনাকালে আমের দাম আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। যেসব আম ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হতো তা এখন ৬৫-৭০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে না। বিক্রেতারা জানান, আমের সিজন প্রায় শেষ। এ কারণে আমের দাম বেড়েছে। এখন কিছু ফজলি আম বাজারে থাকবে বলে তারা জানান।
এমএইচআর/এমকেএইচ