মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে এবার চমেক মর্গের পাহারাদার গ্রেফতার
এবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে মো. সেলিম (৪৮) নামে এক পাহারাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে এক কিশোরী ও এক নারীর মরদেহের সঙ্গে এমন পাশবিক আচরণ করে ধরা পড়েছেন ওই ডোম।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম ওই দুই মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার সাতেশ্বর গ্রামের মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে অসামাজিক ব্যভিচারের অভিযোগে পাঁচলাইশ মডেল থানায় মামলা করবে সিআইডি।
সিআইডির সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি রাতে ১২ বছরের এক শিশুর মরদেহ আসে চমেক হাসপাতালের মর্গে। একইভাবে পরের এপ্রিল মাসেও রাত আড়াইটার দিকে আরেক নারীর মরদেহ আসে মর্গে। কাকতালীয়ভাবে দুই মরদেহের ময়নাতদন্তে সংগৃহীত এইচভিএসে (হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব) মেলে একই পুরুষের শুক্রাণু। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে সিআইডি। তারা সেলিমের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে। এতে ওই দুই নারীর মরদেহে পাওয়া শুক্রাণু সেলিমের বলে শনাক্ত হয়।
সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, সেলিম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আসা দুই নারীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেন। পরে ময়নাতদন্তে দুই নারীর ভ্যাজাইনাল টিস্যু থেকে তার শুক্রাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। সেলিম হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত করতেন। তার বিরুদ্ধে সিআইডির পক্ষ থেকে পাঁচলাইশ মডেল থানায় মামলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, মর্গে রাতে মরদেহ এলে ময়নাতদন্ত রাতে হয় না। পরদিন হয়। সেই সুযোগে ডোম সেলিম দুই নারীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আরও অনেক মরদেহের সঙ্গে এ অযাচার করেছেন। বিশদভাবে জানতে আমরা তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
এর আগে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের কারণে ২০২০ সালের নভেম্বরে মুন্না ভক্ত (২০) নামে একজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত মুন্না অন্তত পাঁচজন কিশোরীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেন বলে প্রমাণ পায় সিআইডি।
মরদেহের সঙ্গে যৌনাচার এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা। কোনো সুস্থ ব্যক্তি এই অযাচার করতে পারেন না। এই যৌন বিকৃতিকে নেক্রোফিলিয়া বলা হয়।
এমএইচআর/এইচএ/জেআইএম