ছুটির দিনে ফাঁকা রাজধানীর সড়ক

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:২০ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২২

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে অনেকটাই স্বরূপে ফিরেছে ইট-পাথরের যান্ত্রিক নগরী রাজধানী ঢাকা। জীবন-জীবিকার তাগিদে কাকডাকা ভোর থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন নগরবাসী। তাদের কেউ অফিস, কেউ ব্যবসা আবার কেউবা ভিন্ন পেশার প্রয়োজনে গন্তব্যে ছুটেন।

গণপরিবহন ছোট-বড় বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, কাভার্ডভ্যান, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিতে অটোরিকশা, ব্যাটারি ও প্যাডেলচালিত রিকশাসহ বিভিন্ন পরিবহন ও ফুটপাতসহ বিভিন্ন সড়কে হেটে লাখো মানুষের ছুটে চলায় রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজনের কারণে একঘণ্টার রাস্তা কখনো কখনো দুই থেকে আড়াই ঘণ্টাও লেগে গেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসা বেশ কিছুদিন ধরে জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে মনে করা হচ্ছে।

Road.jpg

কিন্তু মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি হওয়ায় গত কয়েকদিনের তুলনায় শনিবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর চিত্র সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। রাস্তায় যানবাহনের আনাগোনা কম। ব্যস্ততা নিয়ে ছুটে চলা জনস্রোত নেই। সবখানেই অনেকটাই ঢিলেঢালাভাব। ফুটপাত-বাসে মানুষের গাদাগাদি-চাপাচাপি, পথে পথে জটলা নেই। দুই দিনের ছুটিতে কংক্রিটের এ নগরীর রাজপথ এখন অনেকটাই ফাঁকা।

Road.jpg

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে— রাস্তাঘাটে ছুটে চলা হাজারো মানুষের কোলাহল নেই। নেই যানজটে আটকে থাকা গণপরিবহনের চিত্র। বেশিরভাগ সড়কে ‘রিলাক্স মুডে’ দেখা যায় যানজট নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টদের।

রাস্তায় স্বল্পসংখ্যক যানবাহন দ্রুতবেগে গন্তব্য ছুটতে দেখা যায়। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়, গুলিস্তান, পুরানা পল্টন ও প্রেস ক্লাব এলাকা যেখানে প্রতিদিন যানজট লেগেই থাকে সেখানে অনেকটাই সুনসান নিরবতা বিরাজ করছে।

Road.jpg

অন্যান্য বছর সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বিশেষ করে টিএসসি এলাকা অসংখ্য মানুষের উপস্থিতিতে সরগরম থাকলেও শনিবার দুপুর নাগাদ তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। অন্যান্য বছরের মতো মাইকযোগে বঙ্গবন্ধুর ভাষণও বাজতে দেখা যায়নি। সরকারি ছুটির কারণে প্রায় সব মার্কেট, বিপণিবিতান, শপিংমল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে দেখা যায়।

ছুটির দিনে তরুণ-তরুণীদের রিকশা ও মোটরসাইকেলযোগে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সামনে থেকে পলাশীগামী রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক মধ্যবয়সী ভদ্রলোক ছবি তুলছিলেন। চারপাশে সারি সারি সবুজ বৃক্ষরাজি। প্রচণ্ড রোদেও এখানে খানিকটা শান্তি মেলে। আজ রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় পরিবেশটা দারুন লাগছে তাই না, প্রশ্নোত্তরে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দেন ওই ভদ্রলোক।

Road5.jpg

শাহবাগ এলাকায় বেসরকারি চাকরিজীবী রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা ফরিদউদ্দিন বলেন, অন্যান্য দিন ভোরে ওঠে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বাসে উঠতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। যানজটের কারণে প্রায়দিনই সময়মতো অফিসে যায় না। কিন্তু আজ মাত্র ২৫ মিনিটে চলে এসেছি। আহারে ঢাকা শহরে সারা বছর যদি এমনভাবে চলাচল করা সম্ভব হতো, কতইনা ভালো হতো।’

এমইউ/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।