চট্টগ্রামে ৮ দিনেও খোঁজ মেলেনি এনজিও কর্মকর্তার
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে গত ৮ দিন ধরে নিখোঁজ এনজিও কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেনের কোনো হদিস মেলেনি। এবার ওই ব্যক্তির সন্ধান দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।
মঙ্গলবার (৩১ মে) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিখোঁজ শাহাদাতের ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ আল নোমান সুমন।
তিনি বলেন, গত ২৪ মে রাতে রহস্যজনকভাবে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের রওশন হাট থেকে নিখোঁজ হন বেসরকারি ক্ষুদ্রঋন প্রদানকারী সংস্থা প্রত্যাশীর ফিল্ড অফিসার শাহাদাত। নিখোঁজের দুদিন পর শাহাদাতের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোষ্ট দিয়ে বলা হয়, ম্যানেজার আমাকে বাঁচতে দিল না।
ম্যানেজারের কাছে শাহাদাতের দুই লাখ টাকা পাওনা ছিল জানিয়ে নোমান বলেন, ২৪ মে রাতে ম্যানেজার মোবাইল ফোনে আমাদের জানান যে, শাহাদাত নিখোঁজ হয়েছে। পরদিন আমরা চন্দনাইশ প্রত্যাশী অফিসে গেলে ম্যানেজার বলেন, শাহাদাতের কাছে অফিসের কোনো পাওনা নেই। মাঠ পর্যায়ে কোনো সদস্যের সঙ্গেও ঝামেলা ছিল না শাহাদাতের।
‘এরপর থানায় জিডি করে প্রত্যাশী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখানে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেনের বিষয় উল্লেখ করেনি তারা। কিন্তু ঘটনার দুদিন পর শাহাদাতের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোষ্ট দেওয়ার পর ম্যানেজারের কথার ধরন পাল্টে যায়। তখন তিনি বলেন, শাহাদাত প্রত্যাশী কর্তৃপক্ষের কাছে দুই লাখ টাকা পাওয়ার কল্পকাহিনী সাজাচ্ছে।’
‘এখন আমাদের ধারণা, ম্যানেজারের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় তিনি আতাঁত করে শাহাদাতকে গুম করিয়েছেন। পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় জীবন দিতে হল তাকে। গত তিনবছর ধরে প্রত্যাশী এনজিওতে চাকরি করছে শাহাদাত।’
এদিকে, নিখোঁজের ৮ দিন অতিবাহিত হলেও শাহাদাতের কোনো হদিস না পাওয়ায় সন্তানের শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার মা বাবা। তাদের দাবি ফেসবুক স্ট্যাটাস পর্যালোচনা করলেই বেরিয়ে আসবে তার নিখোঁজের মূল রহস্য।
এ নিয়ে ২৫ মে চন্দনাইশ থানায় জিডি করে শাহাদাতের পরিবার। জিডির পর পুলিশ দু-একদিন তৎপরতা দেখালেও এরপর রহস্যজনক কারণে নিরব হয়ে যায় তারা। বর্তমানে শাহাদাত বেঁচে আছে কি না তাও নিশ্চিত নয় তার পরিবার।
শাহাদাতের ভাই রিয়াদ উদ্দিন সাইমুন বলেন, নিখোঁজ হওয়ার পর শাহাদাতের ব্যক্তিগত মোটর সাইকেলটিও প্রত্যাশী অফিসে ছিল এবং অফিসে তার চলতি মাসের বেতনও বকেয়া রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাতের পিতা বদিউল আলম তার ছেলেকে ফেরত পেতে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন। এ সময় শাহাদাতের মা ফাতেমা আক্তার ও স্ত্রী তাহমিনা আক্তারসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নিখোঁজ শাহাদাতের গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানাধীন দাতমারা ইউনিয়নের বালুখালী গ্রামে।
ইকবাল হোসেন/এমপি/এমএস