ঢাকার পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে: মেয়র আতিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৫০ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২২

ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন দুই হাজার লোক ঢাকায় চলে আসে। নগরবাসী এখন পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব অনুভব করছে। শহরের সবাই সম্ভাব্যভাবে জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন। এমতাবস্থায় ঢাকার পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

বুধবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত জলবায়ুবিষয়ক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বে মেয়র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মাইগ্রেশনের মতো বৈশ্বিক সমস্যার সরাসরি প্রভাব পড়ে শহরের ওপর। জলাধার উদ্ধার প্রকল্প থেকে শুরু করে পার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণের মতো নানা পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি। জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলা করে টেকসই শহর গড়ে তুলতে উদ্ভাবনী সমাধানের জন্য প্রাইভেট সেক্টর, ডেভেলপমেন্ট পার্টনার ও জনগণের সঙ্গে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে।

jagonews24

আতিকুল ইসলাম বলেন, সিটি কর্পোরেশনকে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর থেকে আমরা খালগুলো উদ্ধারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সেগুলো উদ্ধার করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ও অন্যান্য ভবনের পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সরাসরি সারফেস ড্রেন ও খালে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে খালের পানির পাশাপাশি পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা নিয়মিত লেক, খাল ও ড্রেন পরিষ্কার করছি। কিন্তু বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের লাইন খালে গিয়ে প্রতিনিয়ত খালের পানিকে দূষিত করছে। দূষণের ফলে খালে মাছের চাষ করতে পারছি না, সেখানে মশার চাষ হচ্ছে। এটি আর হতে দেওয়া যাবে না।

‘পয়ঃবর্জের লাইন সারফেস ড্রেন অথবা খালে দেওয়া যাবে না। শহরের অভিজাত এলাকায় আপনারা বাসা-বাড়িতে সুখে থাকবেন আর আপনাদের পয়ঃবর্জ্য সারফেস ড্রেনে ও খালে সংযোগ দিয়ে খাল দূষণ করবেন সেটা হতে পারে না। এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তুলতে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জনগণকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে উন্নত দেশগুলোর দায় রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমি মেয়র'স মাইগ্রেশান কাউন্সিলে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সহায়তায় তিনটি প্রস্তাব করেছি। এর মধ্যে জলবায়ু সংকট যেহেতু মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে, তাই জলবায়ু অভিযোজনে আমাদের আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ দরকার।

jagonews24

‘মোট জলবায়ু তহবিলের অন্তত ৫০ শতাংশ ঢাকার মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল এবং দ্রুত বর্ধনশীল শহরের জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন। আমাদের অভিবাসনকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের একটি রূপ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা উদ্বাস্তু তাদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে তাদের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের সুযোগ দিতে হবে।’

‘এছাড়া আমাদের এই কর্মগুলোর সঙ্গে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়িয়ে বিশেষ করে সবুজ খাতে অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে তাদের অবদান বাড়াতে হবে।’

দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেডের (এইচএসবিসি) উদ্যোগে ডিএনসিসির সহযোগিতায় আয়োজিত ‘টুগেদার ফর ক্লাইমেট’ শীর্ষক এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএনসিসি মেয়র।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, এইচএসবিসি বাংলাদেশের সিইও মো. মাহবুব উর রহমান ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

এমএমএ/এমপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।