বেনাপোলে পণ্য আমদানি কমেছে ৯৪ হাজার ৫০৫ টন


প্রকাশিত: ০৮:৫৬ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
ফাইল ছবি

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বছরের প্রথম ৭ মাসে ৯৪ হাজার ৫০৫ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন পণ্য কম আমদানি হয়েছে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ৭ মাসে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭২৪ দশমিক ৭৭ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করা হয়। আর চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে পণ্য আমদানি হয়েছে ৫ লাখ ৯২ হাজার ২১৮ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৫ সালের দিকে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাস জুড়ে দেশে ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা। যে কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমে গেছে। এছাড়া কাস্টমসের নানা হয়রানির ফলে বেনাপোল দিয়ে আমদানি কমতে শুরু করেছে। আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া, প্রতিটি কেমিকেল পণ্য টেস্টে পাঠানো, দিনের পর দির ফাইল আটকে রাখা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানাবিধ হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে কাস্টম কর্মকর্তারা বলছেন, আগে এই বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীরা শুল্ক ফাঁকি দিত। এখন সেই সুযোগ নেই। যে কারণে অনেক ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।

বেনাপোল বন্দরের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি পণ্যের পরিমাণ ছিল ৮৩ হাজার ২৯৭ দশমিক ৯৪ মেট্রিক টন, আগস্ট মাসে ৯৮ হাজার ২৫১ দশমিক ৬৭ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বর মাসে ৭১ হাজার ৮৬৯ দশমিক ৯৬ মেট্রিক টন, অক্টোবর মাসে ৭৫ হাজার ৪৩৪ দশমিক ২৩ মেট্রিক টন, নভেম্বর মাসে ৮১ হাজার ৩৮৯ দশমিক ৭০ মেট্রিক টন, ডিসেম্বর মাসে ৯০ হাজার ৬০৬ দশমিক ৯৮ মেট্রিক টন এবং জানুয়ারি মাসে ৯১ হাজার ৩৬৮ দশমিক ৪৪ মেট্রিক টন পন্য আমদানি করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য আমদানি করা হয়েছিল ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭২৪ দশমিক ৭৭ মেট্রিক টন পণ্য।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, আগে বেনাপোল দিয়ে গামের্ন্টস শিল্পের অনেক ধরনের মাল আমদানি হতো। কিন্তু এখন সেসব মাল দেশেই তৈরি হওয়ার কারণে এখন আমদানি হচ্ছে না। একইভাবে অন্য পন্যের ক্ষেত্রে একই অবস্থা থাকার কারণে শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কম হচ্ছে। এছাড়া বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দাবিকৃত ক্লিয়ারিং হাউস চালু হলে আমদানি-রফতানিতে আরও গতি ফিরে আসবে। একই সঙ্গে সবার আন্তরিকতা থাকলে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের গতিশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি সরকারের রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।

যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, বর্তমানে সারাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য খারাপ সময় পার করছে। যে কারণে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। আবার কাস্টমের হয়রানির কারণেও অনেক ব্যবসায়ী বেনাপোল ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে গেছে। যে কারণে গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে পন্য আমদানি ব্যাপকহারে কমে গেছে।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার এএফএম আব্দুল্লাহ খান জানান, এ বন্দর দিয়ে এখন শুল্ক ফাঁকি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে কারণে সুযোগ সন্ধানীরা পণ্য আনছে না। এছাড়া উচ্চ শুল্কযুক্ত ১৩ হাজার মেট্রিক টন পন্য কম আমদানি হয়েছে। শুধু বেনাপোলে নয় দেশের বিভন্ন বন্দরগুলোতে পণ্য আমদানি কমে গেছে।

জামাল হোসেন/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।