নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০৩ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, যৌতুক ও বাল্যবিয়ে রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, এ সংক্রান্ত কমিটির মনিটরিং এবং আইনের সঠিক বাস্তবায়নে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। তিনি বলেন, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সরকারের কার্যক্রম যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকায় ইস্কাটনে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সভাক্ষ থেকে অনলাইনে চট্রগ্রাম (৫ জন) ও সিলেট (৫ জন) বিভাগের মোট দশ জন শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

এসময় ঢাকায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত থেকে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার কাছ থেকে নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন করে জীবন শুরু করা চট্রগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার লায়লা আক্তার এবং সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শাহেনা আক্তার সম্মাননা স্মারক, নগদ অর্থ ও সনদ গ্রহণ করেন।

বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, সরকারের নারীবান্ধব উন্নয়ন ও নীতি কৌশল বাস্তবায়নের ফলে গত এক যুগে সরকারি, বেসরকারি, আত্মকর্মসংস্থানসহ উন্নয়নের সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নারী উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনার জন্য।

প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, নারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নকে বেগবান করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে জয়িতা কার্যক্রমের সুচনা করেন। জয়িতার কার্যক্রম বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং নারীবান্ধব বিপণন নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।

ধানমন্ডিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার তলা ভবন নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। জয়িতাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যহীন ও সমতা ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার জয়িতাদের চিহ্নিত করে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এ জয়িতারাই আজ দেশে সফলতার প্রতীক।

তিনি বলেন, নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশি সুযোগ চায় না, সমান সুযোগ চায়। বঙ্গবন্ধু এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে রাষ্ট্র হবে শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত, যে রাষ্ট্রের নারী-পুরুষ সমানভাবে নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী দেশের উন্নয়নে ভুমিকা রাখবে। বঙ্গবন্ধু কন্যার সুদৃঢ় নেতৃত্বে নারীরা আজ পুরুষের সমান যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে বেশি যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধী দলীয় নেত্রী নারী ও সংসদ উপনেতা নারী। যা সারা বিশ্বে বিরল। যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন।

চট্রগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন এবং রেঞ্জ ডিআইজি, চট্টগ্রাম মো. আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান।

চট্টগ্রাম বিভাগের সম্মাননা প্রাপ্ত নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ পাঁচ জয়িতা হলেন-অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার নাছরিন সোলতানা জেরিন, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী রাঙ্গামাটি জেলার সপ্তর্ষি চাকমা, সফল জননীতে খাগড়াছড়ি জেলার ইন্দিরা দেবী চাকমা, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করা ফেনী জেলার লায়লা আক্তার এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় কক্সবাজার জেলার মনোয়ারা পারভীন।

সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্ব উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, ডিআইজি সিলেট রেঞ্জ মফিজ উদ্দিন আহমেদ।

সিলেট বিভাগের সম্মাননা প্রাপ্ত নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ পাঁচ জয়িতা হলেন-অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে সুনামগঞ্জ জেলার সৈয়দা ফারহানা ইমা, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার মার্গ্রেট সুমের, সফল জননীতে সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার সালেহা বেগম, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করে মৌলভীবাজার জেলার শাহেনা আক্তার এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় সিলেট জেলার খুশি চৌধুরী।

সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে ৫০:৫০ এ উন্নীত করতে মাঠ প্রশাসনকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। সরকারের বহুমুখী কার্যক্রমের ফলে নির্যাতন, যৌতুক ও বাল্যবিয়ের হার কমে এসেছে।

চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অন্য নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ জয়িতারা নিজ নিজ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের কাছ থেকে সম্মাননা স্মারক, নগদ অর্থ ও সনদ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা সিলেট বিভাগের জয়িতাদের নিয়ে জয়িতা তোমরাই বাংলাদেশের বাতিঘর স্মরণিকার মোড়ক উম্মোচন করেন।

আইএইচআর/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।