যার কাছে চোরাই মোটরসাইকেল পাবো তাকেই গ্রেফতার: হারুন
চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাওয়া যাবে তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত এবং গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। চোরাই মাল কেনা একটা অপরাধ। কেউ যদি কাগজপত্রবিহীন চোরাই মোটরসাইকেল কেনেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে মোটরসাইকেল চোরচক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতারের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গ্রেফতার মো. খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদের কাছ থেকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে ডিবি।
আরও পড়ুন>>ডিবির জ্যাকেটে ‘কিউআর কোড’, তবু থামছে না প্রতারকরা
ডিবি জানায়, গত মাসে তুরাগ এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা রুজু হয়। মামলা তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জানা যায় মোটরসাইকেল চোর নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থান করছেন। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ চোরের অবস্থান শনাক্ত করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে খালেককে গ্রেফতার করে।
ডিবিপ্রধান বলেন, মোটরসাইকেল চুরি রোধ করাই যাচ্ছে না। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে। বাসার গ্যারেজ, রাস্তা কিংবা অফিস থেকেও তালা ভেঙে অনেকের মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে।
‘গ্রেফতার খালেকের সঙ্গে আরও ৭-৮ জন সহযোগী রয়েছেন। যারা এরই মধ্যে মোটরসাইকেল চুরির মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন। জেল থেকে বেরিয়ে তারা একইভাবে চুরির কাজ করেন। এ চোরচক্রের সদস্যরা প্রথমে কোনো একটি বাসায় মোটরসাইকেল থাকলে সেটি টার্গেট করেন। বাসার গ্যারেজের তালা ভাঙার পর মোটরসাইকেলের তালা খুলে নিয়ে যান।’
তিনি বলেন, গ্রেফতার খালেক একসময় চাঁদপুরে মোটরসাইকেলের মেকানিকের কাজ করতেন। মেকানিকের কাজ করা অবস্থায় চোরচক্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং মোটরসাইকেল চুরি চক্রে জড়িয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন>>রিজার্ভ চুরির মামলা নিয়ে ফিলিপাইনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরির পর ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও হাওর অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কম দামে বিক্রি হয়। এসব চোরাই মোটরসাইকেল কাগজপত্র না থাকলেও কিনে নিচ্ছেন অনেকে। আমরা বারবারই বলে যাচ্ছি, কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাবো তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত করবো। কারণ চোরাই মাল কেনাও একটা অপরাধ। কেউ যদি কাগজপত্রবিহীন চোরাই মোটরসাইকেল কেনেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আমরা আইগত ব্যবস্থা নেবো।
তিনি বলেন, যে দোকানে ডুপ্লিকেট (নকল) চাবি বানানো হয় তারাও চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত। কারণ কেউ একজন ডুপ্লিকেট চাবি বানাতে এলে ওই দোকানি একই চাবি বানিয়ে তার কাছেও একটি রেখে দেন। তারা এই কাজটি নিয়মিত করছেন। যারা নকল চাবি বানান তাদের বিরুদ্ধে ডিবির অভিযান চলছে।
অনেক মানুষ ব্যাংক থেকে লোন করে অথবা ধারদেনা করে মোটরসাইকেল কেনেন জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, কষ্টের টাকায় কেনা মোটরসাইকেল যার চুরি হয় সেই বোঝেন। তাই আমি অনুরোধ করবো, গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল চুরি হলেই তাৎক্ষণিক নিকটস্থ থানায় জিডি করুন। এরপর জিডির কপিটি নিয়ে আমাদের ডিবির টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মোটরসাইকেল উদ্ধারে চেষ্টা করতে পারবো।
আরও পড়ুন>>মাদারীপুরের এক বিদ্যালয়ের ১২ ল্যাপটপ চুরি
গ্রেফতারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, গ্রেফতার খালেক গত ১৫ বছরে এক হাজার মোটরসাইকেল ঢাকা থেকে চুরি করেছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার পূর্ব বাজারের একটি গ্যারেজ থেকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে একই চক্রের কাছ থেকে গত মাসে আমরা আরও ৪০টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছি।
টিটি/ইএ/জেআইএম