টেলিফোনে আড়িপাতা সংবিধান লঙ্ঘন: সংসদে জি এম কাদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৩ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে শুনছি, বিরোধী মতালম্বীদের বিশেষ করে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী ও সরকারের বিরোধিতা করে কথা বলেন এমন ব্যক্তিদের স্মার্টফোনে আড়িপাতা হচ্ছে। এটা নাকি ইসরায়েলি কোম্পানি ‘প্যাসিটোরার তৈরি স্পাই ওয়ার’ নামে একটি প্রযুক্তির মাধ্যমে।

তিনি বলেন, ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিশ্বের ২৭টি নামি দামি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বিশ্বের ৪৫টি দেশে স্মার্টফোনে আড়িপাতার জন্য একটি গোয়েন্দা প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। সে তালিকায় বাংলাদেশও আছে। সেখানে রিপোর্টে বলা হয়েছে- স্মার্টফোনে অড়িপাতার জন্য ‘পিয়ারহে ‘ বা ‘স্পাই ওয়ার’ ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২২ সালে ৫৭ লাখ ডলার ব্যয়ে এ আড়িপাতা প্রযুক্তি কিনেছে বাংলাদেশ, যা সুস্পষ্টভাবে আমাদের সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদের ৪৩ ধারায় লঙ্ঘন।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।

আরও পড়ুন: সরকারের সমালোচনা রাষ্ট্রদ্রোহিতা হতে পারে না: জি এম কাদের

জি এম কাদের বলেন, সংবিধানে বলা আছে- প্রত্যেক নাগরিক নিয়মিত কথা বলা ও মনোভাব আদান-প্রদান করতে পারবে, এটা তার জম্মগত অধিকার। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতিরেকে স্পাই ওয়ার বা যেই প্রযুক্তি ব্যবহার করুক না কেন তা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলা যায়। যে কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে তার ফোনে আড়িপাতা অনৈতিক ও সংবিধান পরিপন্থি। এগুলো ব্যবহৃত হয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড জানার জন্য। কিন্তু আমাদের এখানে এগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে যারা সরকারের বিরোধিতা করে তাদের ফোনালাপ, মেসেঞ্জারে নিয়মিত আড়িপাতা ও রেকর্ড করার জন্য।

তিনি বলেন, সরকার কি এসব ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহী মনে করে এসব করছে? তাহলে গণপ্রজাতন্ত্রী অর্থাৎ যেখানে জনগণই রাষ্ট্রের মালিক, সেখানে রাষ্ট্র কি এটা করতে পারে? তাহলে সরকারি দল ও রাষ্ট্র কি একীভূত হয়ে গেছে? এমনটি হলে সেখানে সুশাসন দেওয়া সম্ভব হবে না।

আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে বলে মনে হয় না: জিএম কাদের

তিনি আরও বলেন, আর একটা হতে পারে- সব বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করা, তাদের একে-অপরের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান বা কথা বলার অধিকার এদেশের মানুষের জম্মগত অধিকার। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, যে দেশে প্রজাগণ মালিক তারা কথা বলবে, মতপ্রকাশ করবে সেটা সবার কর্তব্য। এ ধরনের আড়িপাতার কর্মকাণ্ড এদেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তিনি এর ঘোর বিরোধিতা করে এসব প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানান।

নিরাপদ সড়ক আইনের বাস্তবায়ন কেন সরকার করছে না? সে প্রশ্ন তুলে জি এম কাদের বলেন, যে আইনটি এই জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হলো। তা কার স্বার্থে, কাদের রক্ষার্থে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, এর প্রতিবাদে সংসদে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব আনা উচিত।

আরও পড়ুন: গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী

জি এম কাদের রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বিশ্বের বহু দেশের চেয়ে রাজধানী ঢাকায় এখন দূষণের মাত্রা এত বেশি যে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মানুষ মারা যাচ্ছে, নানারকম ফুসফুসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এটি রোধ করতে হবে।

এইচএস/বিএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।