শবে বরাতে পুরান ঢাকায় বরাতি রুটি-হালুয়ার পসরা

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক
ক্যাম্পাস প্রতিবেদক ক্যাম্পাস প্রতিবেদক জবি
প্রকাশিত: ১১:৪৪ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৩

মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র শবে বরাত। পুরান ঢাকাবাসীর কাছে রাতটি ধর্মীয় ইবাদত বন্দেগীর পাশাপাশি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে পালিত একটি উৎসব। এ শবেবরাত কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার অলিগলিতে বিকেল থেকে ফেন্সি রুটির পশরা সাজিয়েছে দোকানিরা। বাহারি রকমের ফেন্সি রুটি ও বিভিন্ন স্বাদের হালুয়া বেচাকেনা চলছে অলিগলিতে।

ইবাদতের পাশাপাশি শবেবরাতে বরাতি রুটি হালুয়া খাওয়া পুরান ঢাকাবাসীর একটি ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে। স্থানীয় মুসলমানরা এ রুটি খেয়ে শবে বরাত পালন করেন।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, পুরান ঢাকার নারিন্দা, ওয়ারী, দয়াগঞ্জ, কলতাবাজার, প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজারে শবেবরাত উপলক্ষে বিক্রি হচ্ছে নানা নকশার পাউরুটি ও হালুয়া। দোকানে মাছ, কুমির, হাঁসের আদলে বেশ কয়েক প্রকার রুটি রয়েছে, সাথে রয়েছে বুটের হালুয়া, গাজরের হালুয়া, সুজির হালুয়া, সেমাই।

jagonews24

ফেন্সি রুটি বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। কেজি প্রতি রুটির দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। মাছ, প্রজাপতি আকৃতিররুটি সর্বোচ্চ ৫-৭ কেজির মধ্যে রয়েছে। সর্বোচ্চ দাম ১৫০০ থেকে ২০০ টাকা। এ দিনে বিকেল থেকে দোকানে দোকানে চলছে উৎসব মুখর বেচাকেনা। শুধু নিজেদের জন্য নয় আত্নীয় স্বজনদের বাসায় রুটি হালুয়া পাঠানো হয়।

শবে বরাত উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের হৈ-হুল্লোড়ের শেষ নেই। বিকেল থেকে দলবেঁধে পটকা ও তারাবাতি কিনতে দেখা গেছে।নারিন্দা মোড়ের স্থানীয় কিশোর রাফি শবেবরাতে ইবাদতের বিষয়ে না জানলেও পটকা ও তারাবাতির ব্যাপারে জানা শোনারয়েছে। রাফি বলেন, এ দিনে সন্ধ্যার পর থেকে বাসায় রুটি ও হালুয়া খাওয়া হয়। এরপর পটকা ও তারাবাতির জ্বালিয়ে আনন্দকরে থাকি। এশার নামাজের পর সবাই দলবেঁধে মসজিদে যাই।

নারিন্দার বোম্বের কনফেকশনারির দোকানি জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর শবে বরাত উপলক্ষে আমাদের নিজস্ব বেকারিতে বিভিন্ন রকমের রুটি ও হালুয়া তৈরি করে থাকি। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে রুটি কিনে নিয়ে যায়। এ দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদের লক্ষ টাকার মত বেচাকেনার টার্গেট থাকে।

পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা রফিক জানান, শবে বরাতের রুটি হালুয়া খাওয়া পুরান ঢাকার দুইশ বছরের ঐতিহ্য। আর পুরান ঢাকার মানুষও ভোজন রসিক এবং ঐতিহ্যপ্রেমী। এখন তো রুটি হালুয়া খাওয়া অনেক কমে গেছে। নির্দিষ কয়েকটি এলাকার মানুষ শবেবরাতের এ সংস্কৃতি ধরে রেখেছে। আমরা যখন শৈশবে ছিলাম, সন্ধ্যার হালুয়া রুটি খেয়ে মসজিদে চলে যেতাম। এখনকার তরুণদের মাঝে সেই আমেজ নেই। সবাই মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত।

রায়হান আহমেদ/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।