হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম শুরু
সারাদেশে শুরু হয়েছে জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম। তারই ধারাবাহিকতায় আজ (বুধবার) রাজধানীর বেইলি রোডস্থ ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া আজ সিরাজগঞ্জ জেলায় ৬টি, ঝিনাইদহ জেলায় ৭টি, টাঙ্গাইল জেলায় ৩টি ও কুমিলা জেলায় ৮ স্কুলে জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রমের প্রথম অনুষ্ঠানে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোছা. সুফিয়া খাতুনের সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আর এইচ এম আলাউল কবির, বাংলাদেশ ওপের সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (কর্পোরেট অ্যাফের্য়াস) ইনামুল্লাহ সাঈদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হাসনাইন হেইকেল এবং কিশোর আলোর নির্বাহী সম্পাদক সিমু নাসের।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০১৬’ নিয়ে তৈরি একটি ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হয়।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অডিটরিয়ামে বক্তৃতা পর্বে সভাপতির বক্তবে ভিকারুরনিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোছা. সুফিয়া খাতুন বলেন, শুধু বিজ্ঞান নয়, যে কোনো বিভাগের শিক্ষার্থীরাই প্রোগ্রামিং শিখতে ও করতে পারবে। এই আয়োজনের সারাদেশের শিক্ষার্থীদের অধিক অংশগ্রহণে সফল করতে হবে। তাহলে দেশ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ওপের সোর্স নের্টওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের প্রযুক্তির ভাষা জানতে হব। শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির সঙ্গে থাকতে হবে, নিজের মেধা দিয়ে প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যদের সঙ্গে আমাদের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে হবে। 
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আর এইচ এম আলাউল কবির বলেন, বর্তমান যুগ প্রযুক্তির। প্রযুক্তিকে আপন করে নিতে না পারলে পিছিয়ে পরতে হবে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীদের ৩৩টি বিষয় বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার।
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (কর্পোরেট অ্যাফের্য়াস) ইনামুল্লাহ সাঈদ বলেন, যেকোনো ভালো কাজের সঙ্গে রবি থাকার চেষ্টা করে। দেশকে উন্নত দেশে হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকলকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। রবির মতো নিজেকে নিজ নিজ আলোয় জ্বলে উঠতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হাসনাইন হেইকেল বলেন, প্রোগ্রামিং মাধ্যমে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। সকলকেই প্রোগ্রামিং শিখতে হবে। তোমাদের এখনই সময় নিজেকে আরও বেশী এগিয়ে নেওয়া। প্রোগ্রামিং শিখে বিশ্বকে জয় করতে হবে তোমাদেরেই।
দেশের হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এর প্রতি আগ্রহী করে তোলা এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গত বছর থেকে এই আয়োজন শুরু করেছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। প্রতিযোগিতায় প্রোগ্রামিং ছাড়াও আইসিটি কুইজও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৪র্থ সেমিস্টার পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এবার ১৬টি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা হবে অনলাইন জাজিং প্ল্যাটফর্ম কোডমার্শালে (www.codemarshal.org)।
উল্লেখ্য, দেশের ১৬টি শহরে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হচ্ছে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকা , গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, পাবনা, পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, কুমিল্লা, যশোর ও ময়মনসিংহ । সব অঞ্চলের বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজনে রয়েছে আইসিটি বিভাগ, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাস্তবায়ন সহযোগী বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন), একাডেমিক সহযোগিতায় কোডমার্শাল এবং পার্টনার হিসেবে রয়েছে কিশোর আলো, এটিএন নিউজ ও বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) ।
প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানার ওয়েব ঠিকানা www.nhspc.org । এছাড়া ফেসবুক পেইজেও বিস্তারিত জানা যেতে পারে www.facebook.com/nhspcbd।
এআরএস/এমএস