স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল

রফিক আহমদ খান
রফিক আহমদ খান রফিক আহমদ খান , মালয়েশিয়া প্রবাসী সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০১:১৫ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০২০

পানির অপর নাম জীবন। সকলের জানা কথা। যে পানি খেয়ে মানুষ বাঁচে সেটা বিশুদ্ধ পানি। আমরা সাধারণত ঘরে-বাইরে দুজায়গায় পানি খাই। আমরা বাসা বাড়িতে বিশুদ্ধ পানি খাই, রেস্তোরাঁয় বিশুদ্ধ পানি খাই, ফুটপাতের দোকানে বিশুদ্ধ পানি খাই। পানি বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য বা বিশুদ্ধপানি বিশুদ্ধ থাকার জন্য পানি পরিষ্কার থাকতে হবে। বিশুদ্ধ পানি অপরিষ্কার হয়ে গেলে আর বিশুদ্ধ থাকে না। আমাদের খাবারের জন্য ব্যবহৃত থালা-বাটি-কাপ-প্লেট-চামচ ইত্যাদি পরিষ্কার হওয়া চাই। এগুলো স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিষ্কার করার জন্য বিশুদ্ধ পানি না-হলেও পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুতে হয়।

গামলা বা বালতি ভরা পানি একবার দুবার তিনবার কয়বার ব্যবহার করা যায়? বা কয়বার ব্যবহার করার পর পানিগুলো অপরিষ্কার হবে? আমরা অধিকাংশ নাগরিক নগরে ও পৌর এলাকায় ফুটপাতে টি-স্টল থেকে চা খাই। রাস্তার পাশে বিক্রি করা বিরিয়ানি, খিচুড়ি, নুডলসসহ নানা রকম খাবার খাই। হয়ত আপনি খান না, কিন্তু যারা খান তারা এদেশেরই মানুষ। আমার আপনার ভাই। ফুটপাতে খাওয়াটা খারাপ কিছু নয়।

উন্নত দেশ মালয়েশিয়ায় ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই ফুটপাতে খাবার খায়, সকাল-বিকাল-দিন-রাত্রি। সে দেশে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকেরা এসে নির্দ্বিধায় ফুটপাতের খাবার খেয়ে কাটিয়ে দেন মালয়েশিয়া ভ্রমণের দিন। পেটের পীড়া নেই, কোন অসুখ-বিসুখ নেই। কারণ, সে দেশে ফুটপাতের দোকানে পরিষ্কার পানির লাইন আছে। ফুটপাতে খাবারের দোকান খুললে সেখানে পানির টেপ, বেসিন সবই আছে। যথেষ্ট পানির সরবরাহ আছে।

আর আমাদের দেশে ফুটপাতের খাবারের দোকানে পানির লাইন, পানির টেপ, বেসিন কিছুই নেই। আছে শুধু কষ্টে সংগ্রহ করা এক ড্রাম পানি। টি-স্টলে থাকে একবালতি পানি। তা-ও ছোট্ট বালতিতে। এই ছোট্ট একবালতি পানিতে আমার চা খাওয়া কাপ, আপনার কাপ, ওনার, তার কাপসহ শতবার কাপ ধোয়। একইভাবে ফুটপাতে বিরিয়ানি, খিচুড়ি, নুডলসসহ খাবার বিক্রেতারাও একবালতি পানিতে বারবার প্লেট ধোয়।

আমাদের দেশের ফুটপাতের খাবার খারাপ নয়, কিন্তু পানির দোষেই খাবার খারাপ হচ্ছে। আমাদের স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে পানির দোষে। ফুটপাতের খাবার বিক্রি বন্ধ করাও যাবে না। যা শতভাগ অসম্ভব বলা যায়। তাই ফুটপাতে যেখানে যেখানে সিটি কর্পোরেশন বা পৌর কর্তৃপক্ষ দোকান করার অনুমতি দেবে সেখানে পানির লাইন থাকাও দরকার। এখন না-হলেও উন্নত বাংলাদেশে তা হওয়া চাই। রাস্তার পাশের দোকান থেকে খাবার প্যাকেট করে নিয়ে যাবে, সেরকম হলে পানির লাইন না-থাকলেও সমস্যা নেই। যেখানে কাপ-প্লেট ধোয়ার ব্যাপার আছে, সেখানে পানির লাইন অবশ্যই দরকার। উন্নত বাংলাদেশে খাবারের দোকানে একবালতি পানির যুগ যেন না-থাকে। প্রয়োজনীয় পানি ব্যবহার করতে পারার যুগ আসুক বাংলাদেশে। কীভাবে পানির সুব্যবস্থা করবে সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা কর্তৃপক্ষসমুহ ভাববেন। আমরা কেবল পরিষ্কার পানি চাই।

এককথায় ফুটপাতের খাবারের মানের প্রতি সরকারের নজর দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, ফুটপাতে যারা খান, তারা এদেশেরই নাগরিকদের মধ্যে বৃহত্তর একটা অংশ। তাই ফুটপাতের খাবারও যেনো ন্যূনতম স্বাস্থ্যসম্মত হয়। আগামীতে পরিষ্কার খাবার খাবো, স্বাস্থ্য ভালো রাখবো। স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।