নাটক থেকে ওয়েব-সিনেমা, চয়নিকার বদলে যাওয়া সময়
বাংলাদেশের আলোচিত পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর জন্মদিন আজ। বিশেষ এই দিনে বাংলাদেশের নাটক-চলচ্চিত্র ও ওয়েব-জগতে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আসা এ নির্মাতা সম্পর্কে জানুন নানা তথ্য। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
২০০১ সালে ‘এক জীবন’ নামের একটি নাটক দিয়ে নির্মাতা হিসেবে তার যাত্রা শুরু। সেই সময় তার কথায়, মূলত সেটে মাত্র ‘দরকারি কাজের জন্য’ গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে চিত্রনাট্য নিয়ে কথা চলছিল এবং প্রযোজক জানতে চাইলেন কে দেবে পরিচালনা? মুহূর্তের সিদ্ধান্তে চয়নিকা বলেছিলেন ‘আমি’। সেই ছোট্ট ‘হ্যাঁ’ ছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম ধাপ।
-
প্রথম নাটকের সময় বাজেট ছিল নগন্য। এমনকি পোশাক, আবহ, রেইন-ইফেক্ট সবই ছিল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। তবুও গল্প বলার দৃঢ় সংকল্প, নতুনত্বের আকাঙ্ক্ষা আর শব্দ নয়, চরিত্র আর অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা নিয়েই শুরু করেছিলেন।
-
চয়নিকা চৌধুরীর প্রথম দিকে বেশিরভাগ কাজ ছিল ছোট পর্দায় নাটক, টেলিফিল্ম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে তার কাজ। দীর্ঘ ২৪ বছর, এই সময়ে নিয়মিত কাজ করেছেন, নতুন ধারার নাটক, নাট্যচিত্র ও ‘ঈদ স্পেশাল’ থেকে শুরু করে ওয়েব এবং সিনেমা।
-
চয়নিকা চৌধুরীর প্রথম চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয় ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমায়। যেখানে তিনি প্রিয় অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন।
-
এর পর ২০২৩–এ মুক্তি পেয়েছে ‘প্রহেলিকা’ যা তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। ‘এটা আমার ২২ বছরের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় এক মাইলস্টোন’ এমন মন্তব্য দিয়ে তিনি নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন।
-
এই পরিবর্তন কেবল মাধ্যমের নয়; বিষয়, থিম, কাহিনার গভীরতাও বদলেছে। ছোট-পর্দার নাটক থেকে যে সরল গল্পগুলো করতেন, এখন বড় পর্দায় নাটকীয়তা, মধুরতা, থ্রিলার সবকিছু মিলিয়ে ভিন্ন মাত্রার চেষ্টা।
-
বাংলাদেশের বিনোদনশিল্প পুরুষ-নির্ভর। সেই চ্যালেঞ্জকে উপেক্ষা করে, চয়নিকা দীর্ঘদিন ধরে প্রমাণ করে চলেছেন নারী নির্মাতাও ধারনা ও কাহিনায় পরিবর্তন আনতে পারে। নাটক, টেলিফিল্ম আর সিনেমা সব মাধ্যমেই তিনি কাজ করে গেছেন, নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক রেখে।
-
তার এই কাজ শুধু ‘নির্মাণ’ নয়, নতুন প্রজন্মকে পথ দেখানো, ভঙ্গি ও ধারার পরিবর্তন আনা।
-
নির্মাণজীবন শুধু গ্ল্যামার নয়; প্রতিযোগিতা, গুণগত মানের চাপ এবং কখনো-কখনো গুঞ্জন আর বিরোধও থাকে। গত কিছু বছরে লাইফ-স্টাইল, প্রোডাকশন হাউস আর অভিনেতা–নির্মাতা পরিমণ্ডলের অস্থিরতার মাঝে থেকেও চয়নিকা নিজের ধারাকে বজায় রেখেছেন। তিনি নিজে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পথটা সহজ ছিল না; ভালোবাসা ও অবজ্ঞা, উভয়ই পেয়েছেন। তবুও কাজ থামিয়ে রাখেননি।