‘শিভগামি’ ছাড়া বাহুবলী কি সম্পূর্ণ হতো?
এস. এস. রাজামৌলির মহাকাব্যিক সিনেমা বাহুবলী শুধু প্রভাশ কিংবা রানা দগ্গুবতির মতো নায়কদের নায়কোচিত উপস্থিতির জন্য নয়, বরং এক অনন্য নারী চরিত্র শিভগামির জন্যও আজ বিশ্বজুড়ে স্মরণীয়। রম্যা কৃষ্ণনের অনবদ্য অভিনয়ে গড়া এই চরিত্র ছবিকে দিয়েছে শক্তি, গভীরতা ও আবেগের পরিপূর্ণতা। একদিকে মাতৃত্বের কোমলতা, অন্যদিকে সিংহাসনের রক্ষক হিসেবে নির্মম দৃঢ়তা-এই বৈপরীত্যই শিভগামিকে করেছে ব্যতিক্রমী। তাই প্রশ্ন থেকেই যায় ‘শিভগামি’ ছাড়া কি সত্যিই বাহুবলী তার পূর্ণতা পেত? ছবি: তারকার ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
আজ এই গুণী অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে চেন্নাইয়ে জন্ম নেন রম্যা। পরিবারে শিল্প–সংস্কৃতির আবহ থাকায় ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি টান তৈরি হয় তা
-
মাত্র ১৫ বছর বয়সে রূপালি পর্দায় অভিষেক হয় তার। প্রথম দিকে তিনি বেশিরভাগ সময় পার্শ্বচরিত্র কিংবা গ্ল্যামার রোলেই কাজ করতেন। তবে শুরু থেকেই তার চোখে-মুখে অভিনয়ের তেজ ধরা পড়ত।
-
তামিল, তেলেগু, মালয়ালম, কান্নড় থেকে শুরু করে হিন্দি-প্রায় সব ভাষার সিনেমাতেই সমান স্বাচ্ছন্দ্যে অভিনয় করে তিনি প্রমাণ করেছেন, প্রতিভার কোনো সীমানা থাকে না।
-
চার দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অগণিত স্মরণীয় চরিত্র, যেগুলো আজও দক্ষিণ এশিয়ার চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে অমলিন।
-
প্রথম দিকে চলচ্চিত্রে টিকে থাকা সহজ ছিল না। অনেক সময় কেবল নাচের দৃশ্য বা সেকেন্ড লিড হিসেবেই সীমাবদ্ধ থাকতে হতো। কিন্তু এক দশকের কঠোর পরিশ্রমের পর অবশেষে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন একজন ‘সিরিয়াস অ্যাক্টর’ হিসেবে।
-
রম্যার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো বহুমুখিতা। তিনি একইসঙ্গে রোমান্টিক নায়িকা, খলনায়িকা, গ্ল্যামারাস চরিত্র কিংবা মায়ের চরিত্রে সমান দক্ষ।
-
১৯৮৫ সালের ‘পদিকদাবন’ ছবিতে তার প্রথম বড় সাফল্য আসে। এরপর একে একে তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা শক্ত করেন।
-
‘আল্লারি মোগুডু’ ছবিতে তার ‘নীলাম্বরি’ চরিত্র আজও দর্শকের মনে অমর। খলনায়িকা হয়েও তিনি নায়কের সমান জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
-
নব্বই দশকে তিনি ‘খলনায়ক’, ‘দয়াভান’, ‘বেনারসি বাবু’ সহ বেশ কিছু হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেন। যদিও বলিউডে দীর্ঘ ক্যারিয়ার গড়তে পারেননি, তবুও কয়েকটি চরিত্র তাকে বিশেষভাবে আলোচনায় আনে।
-
পরিচালক এস. এস. রাজামৌলির ‘বাহুবলী’তে শিভগামি চরিত্রে তার অনবদ্য অভিনয় তাকে নতুন প্রজন্মের দর্শকদের কাছেও সুপারস্টার বানায়। ছবির সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্রগুলোর একটি হয়ে ওঠে এটি।
-
রম্যা কৃষ্ণনের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি একাধিক জাতীয় ও আঞ্চলিক চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। তেলেগু ও তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড, নন্দী অ্যাওয়ার্ডসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন। তার অভিনয় দক্ষতা শুধু জনপ্রিয়তাই এনে দেয়নি, এনে দিয়েছে স্থায়ী মর্যাদা।
-
রম্যার ক্যারিয়ারের প্রথম দশ বছর ছিল সংগ্রামমুখর। তাকে অনেক সময় বলা হতো শুধু গ্ল্যামার চরিত্রের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু তিনি প্রমাণ করেছেন, শুধু সৌন্দর্য নয়, চরিত্রের গভীরতাই তার আসল পরিচয়।