জন্মদিনে জানুন অমিতাভ বচ্চনের জীবনের অজানা কিছু
আজ বলিউডের মহাতারকা অমিতাভ বচ্চনের ৮৩তম জন্মদিন। ১৯৪২ সালের এই দিনে ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে জন্ম নেওয়া এই মানুষটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি শুধু পর্দায় নন, কোটি মানুষের হৃদয়ে রাজত্ব করে চলেছেন। ‘জঞ্জির’ থেকে ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’ থেকে ‘পিকু’-সময়ের পর সময় তিনি নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন। বয়স যেন তার কাছে কেবল সংখ্যা। আজও তিনি বলিউডের সবচেয়ে ব্যস্ত ও সম্মানিত অভিনেতাদের একজন। জন্মদিনে চলুন দেখে নেই অমিতাভ বচ্চনের জীবনের কিছু দুর্লভ ও অচেনা মুহূর্ত, যা হয়তো অনেকেরই দেখা হয়নি। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
১৯৪০-এর দশকের একটি সাদাকালো ছবি, ছোট্ট অমিতাভ তার মা তেজী বচ্চন ও ছোট ভাই অজিতাভের সঙ্গে। তখন কে জানত, এই নীরব ছেলেটিই একদিন ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী নাম হয়ে উঠবেন।
-
অনেকে জানেন না, ‘মি. নটবরলাল’ (১৯৭৯) সিনেমায় প্রথমবার গান গেয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। গানটির শিরোনাম ছিল, ‘মেরে পাস আও মেরে দোস্তো’। এটি দর্শকদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পায় এবং প্রমাণ করে তিনি শুধু অভিনেতা নন, একজন পারফর্মারও।
-
ব্যস্ততার মাঝেও অমিতাভ সব সময় পরিবারের জন্য সময় রাখেন। পরিবার তার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি-এ কথা তিনি বহুবার জানিয়েছেন।
-
বলিউডের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত সম্পর্কগুলোর একটি রেখা ও অমিতাভ বচ্চন।
-
১৯৭৬ সালে ‘দো আনার, এক আনার’ থেকে শুরু হওয়া তাদের পর্দার রসায়ন বাস্তবেও রটে যায় প্রেমের গুঞ্জনে। যদিও কখনও প্রকাশ্যে কেউ কিছু স্বীকার করেননি, তবুও তাদের একসঙ্গে তোলা কিছু বিরল ছবি আজও ভক্তদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।
-
অন্যদিকে ‘অভিমান’ সিনেমার সেট থেকেই শুরু অমিতাভ ও জয়া ভাদুড়ীর প্রেম, আর ১৯৭৩ সালে চার হাত এক হয় তাদের।
-
দুই সন্তান অভিষেক ও শ্বেতা নিয়ে গড়া তাদের পরিবার আজও বলিউডের অন্যতম আদর্শ সংসার হিসেবে পরিচিত। এক বিরল ছবিতে দেখা যায়-দুই সন্তানকে কোলে নিয়ে উজ্জ্বল হাসিতে ভরা সেই সময়ের অমিতাভ-জয়া দম্পতি।
-
অভিষেক ও শ্বেতার সঙ্গে অমিতাভের অসংখ্য স্মৃতি আজও সযত্নে রয়ে গেছে। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি চাই না আমার সন্তানরা আমার সাফল্যের ছায়ায় বড় হোক, তারা যেন নিজেদের আলোয় আলোকিত হয়।’ আজ অভিষেক সফল অভিনেতা, আর শ্বেতা বচ্চন নন্দা একজন লেখিকা ও সমাজকর্মী।
-
অমিতাভের জীবন শুধু গৌরব নয়, লড়াইয়ের গল্পও। ১৯৮২ সালে ‘কুলি’ সিনেমার শুটিংয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন তিনি। সেই সময় দেশজুড়ে কোটি মানুষ প্রার্থনা করেছিল তার সুস্থতার জন্য। এই ঘটনার পরই অমিতাভ আরও বেশি করে মানুষের প্রিয় হয়ে ওঠেন।
-
২০০০ সালে যখন সবাই ভেবেছিল তার সময় শেষ, তখনই ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-র সঞ্চালক হয়ে ফিরে আসেন তিনি। সেই মুহূর্তে যেন নতুন করে জন্ম নেয় অমিতাভ বচ্চন-একজন স্নিগ্ধ, মার্জিত এবং বুদ্ধিদীপ্ত টিভি ব্যক্তিত্ব হিসেবে।
-
আজও প্রতিটি প্রজন্মের কাছে অমিতাভ বচ্চন এক অনুপ্রেরণা। ৮৩ বছর বয়সেও তিনি কাজ করছেন পূর্ণ উদ্যমে, ‘গণপথ’ ও ‘কালকী ২৮৯৮ এ.ডি.’-র মতো সিনেমায় তার উপস্থিতি প্রমাণ করে, সুপারস্টাররা বুড়িয়ে যান না, তারা সময়কে অতিক্রম করেন।
-
জীবনের এই দীর্ঘ যাত্রায় অমিতাভ বচ্চন শুধু একজন অভিনেতা নন-তিনি এক যুগ, এক প্রেরণা।