৪৬ বছরেও অদম্য প্রভাস
ভারতীয় চলচ্চিত্র অঙ্গনে কিছু নাম আছে, যাদের জনপ্রিয়তা সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে যায় বিশ্বের নানা প্রান্তে। প্রভাস তাদেরই একজন। তেলুগু সিনেমা দিয়ে শুরু হলেও আজ তিনি সর্বভারতীয় তারকা, যার নাম শুনলেই দর্শকের মনে ভেসে ওঠে ‘বাহুবলী’র অনবদ্য মহিমা। বয়সের সাথে সাথে তার কাজের পরিধি ও গুণগত মান যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে জনপ্রিয়তাও। ছবি: অভিনেতার ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
১৯৭৯ সালের ২৩ অক্টোবর ভারতের তেলেঙ্গানায় তার জন্ম। কিন্তু তার মধ্যে যে উদ্যম, পরিশ্রম আর নিষ্ঠা দেখা যায়, তা একেবারেই তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে। ফিটনেস, চরিত্র অনুযায়ী নিজেকে বদলে নেওয়া এবং দীর্ঘ শুটিং শিডিউলে ধৈর্য ধরে কাজ করার মানসিকতাই তাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করেছে।
-
২০০২ সালে ‘ঈশ্বর’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় প্রভাসের। প্রথম দিকে তিনি রোমান্টিক ও অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ‘ভার্ষম’, ‘ছত্রপতি’, ‘বিল্লা’, ‘মির্চি’ তার ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের উল্লেখযোগ্য কাজ।
-
২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বাহুবলী: দ্য বিগিনিং’ এবং ২০১৭ সালের ‘বাহুবলী: দ্য কনক্লুশন’ প্রভাসকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিচিতি দেয়। এই দুটি ছবির জন্য তিনি প্রায় পাঁচ বছর সময় দেন, যা বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার ইতিহাসে বিরল। বাহুবলী চরিত্রে তার অভিনয় তাকে শুধু সুপারস্টার নয়, আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
-
প্রভাস শুধু তেলুগু ইন্ডাস্ট্রিতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। ‘সাহো’ (২০১৯) দিয়ে তিনি বলিউডে প্রবেশ করেন। যদিও সমালোচনা ও প্রশংসা মিলেমিশে এসেছিল, তবে তার ভক্তগোষ্ঠী সিনেমাটিকে ব্লকবাস্টারে পরিণত করে।
-
এরপর ‘রাধে শ্যাম’ (২০২২), ‘আদিপুরুষ’ (২০২৩) এবং ‘সালার’ (২০২৩) নিয়েও আলোচনা তৈরি হয়।
-
প্রভাসের সবচেয়ে বড় শক্তি তার পরিশ্রম। তিনি প্রতিটি চরিত্রের জন্য নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করেন। ‘বাহুবলী’র জন্য শরীর গঠন থেকে শুরু করে ‘রাধে শ্যাম’ এ রোমান্টিক ইমেজ-প্রতিটি ছবিতে দর্শককে নতুন প্রভাস উপহার দিয়েছেন।
-
৪৬ বছর বয়সে এসে যেখানে অনেক অভিনেতা ধীরে ধীরে ক্যারিয়ার কমিয়ে দেন, সেখানে প্রভাস এখনো ব্যস্ততম তারকাদের একজন। একসঙ্গে একাধিক বিগ বাজেট সিনেমা করছেন তিনি। বয়স তার জন্য কোনো বাধা নয়, বরং অভিজ্ঞতা ও পরিপক্বতার কারণে তার কাজের গভীরতা বেড়েছে।
-
প্রভাসের অন্যতম বড় শক্তি তার ভক্তরা। দক্ষিণ ভারত থেকে শুরু করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এমনকি ইউরোপ-আমেরিকাতেও তার বিশাল ফ্যানবেস রয়েছে। ভক্তরা তাকে শুধু নায়ক নয়, এক অনুপ্রেরণা হিসেবেই দেখে।