জন্মদিনে জানুন হলিউডের ‘বার্বি’ মার্গো রবির অজানা অধ্যায়
চকচকে পর্দায় তাকে দেখে মনে হয় যেন কোনো রূপকথার চরিত্র হেঁটে এসেছে বাস্তব জগতে। কিন্তু মার্গো রবি শুধু রূপেই নয়, মননে, প্রতিভায় ও সাহসে হয়ে উঠেছেন এই সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী অভিনেত্রী। ‘বার্বি’ চরিত্রে দ্যুতি ছড়ানো এই অস্ট্রেলিয়ান তারকার পথচলা মসৃণ ছিল না। ছিল সংগ্রাম, আত্মসংযম, আর নিজের মতো করে গড়ে তোলার এক অবিরাম প্রচেষ্টা। চলুন জন্মদিনে জেনে নেই এই হলিউড সুপারস্টারের জীবনের কিছু অজানা, অবিশ্বাস্য আর অনুপ্রেরণাদায়ী অধ্যায়-যা হয়তো পর্দায় দেখা যায় না, কিন্তু গভীরভাবে ছুঁয়ে যায় হৃদয়। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
১৯৯০ সালের এই দিনে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে জন্ম নেওয়া মার্গোর শৈশব কেটেছে অনেকটাই সংগ্রামে। বাবা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ছোটবেলায়। মা ছিলেন একজন ফিজিওথেরাপিস্ট। তিন ভাইবোনের সংসারে অর্থকষ্ট ছিল নিত্যসঙ্গী। কিন্তু সেখান থেকেই জন্ম নেয় আত্মবিশ্বাস আর স্বপ্নবিলাসী মন। অল্প বয়সে একদিকে কাজ করেছেন, অন্যদিকে নাটকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। চোখে ছিল রুপালি পর্দার স্বপ্ন।
-
২০১৩ সালে মার্টিন স্করসেসির পরিচালনায় ‘দ্য উলফ অব ওয়াল’ সিনেমায় লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর বিপরীতে ‘নাওমি’ চরিত্রে দেখা যায় মার্গো রবিকে। যৌন আবেদনময়ী, চালাক আর আত্মপ্রত্যয়ী নারীর এই চরিত্র মার্গোকে রাতারাতি পরিচিত করে তোলে বিশ্বজুড়ে। কিন্তু তিনি শুধু গ্ল্যামারেই আটকে থাকেননি। এই চরিত্রের মধ্য দিয়েই তার অভিনয়ের গভীরতা স্পষ্ট হয়।
-
‘সুইসাইড স্কোয়াড’ সিনেমায় ‘হার্লে কুইন’ চরিত্রে মার্গোর আগমনে যেন এক ঝড় বয়ে যায় কমিকভিত্তিক সিনেমার দুনিয়ায়। প্রেমে পাগল, উন্মাদ অথচ ভীষণ প্রগাঢ় এক নারীচরিত্রকে তিনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, তা অনেক সমালোচককেও বিস্মিত করেছে। এই চরিত্র পরবর্তীতে তার আইকনিক রূপ হয়ে ওঠে।
-
২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বার্বি’ সিনেমা মার্গোর ক্যারিয়ারে একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। মজার বিষয় হলো, প্রথমদিকে তিনি এই চরিত্রে কাজ করতে চাননি। তার মনে হয়েছিল, এটি হয়তো আবারও শুধু একটি ‘রূপের পুতুল’ বানিয়ে দেবে তাকে। কিন্তু মার্গো যখন নিজেই প্রযোজক হয়ে, নারী পরিচালকের (গ্রেটা গারউইগ) হাতে সিনেমার লাগাম তুলে দিলেন, তখন বার্বি কেবল রঙিন ফ্যান্টাসি নয়, নারীবাদ, আত্মঅন্বেষণ আর অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে উঠল। এই সিনেমা প্রমাণ করল, গোলাপি রঙেও বিদ্রোহ থাকতে পারে।
-
মার্গো রবি শুধু অভিনয়েই সীমাবদ্ধ থাকেননি। তিনি ‘লাকিচাপ এন্টারটেইনমেন্ট’ একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়েছেন, যেখানে নারীদের কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে শক্তিশালী গল্প।
-
২০১৬ সালে ব্রিটিশ সহ-প্রযোজক টম অ্যাকারলেকে বিয়ে করেন মার্গো। বেশিরভাগ সময়ই ব্যক্তিগত জীবন আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন তিনি। মিডিয়ার চোখধাঁধানো আলো থেকে দূরে, তিনি নিজের মতো বাঁচতে চান। গ্ল্যামার ও বাস্তবতার এমন ভারসাম্য বজায় রাখা তার আরেকটি বড় গুণ।