থর থেকে বাস্তব জীবন, ক্রিস হেমসওর্থের অজানা গল্প
হলিউডে সুপারহিরোদের ভিড়ে এমন কিছু মুখ আছে যাদের নাম শোনামাত্রই ভক্তদের চোখে উজ্জ্বল ঝলক ফুটে ওঠে। ক্রিস হেমসওর্থ সেই তালিকার শীর্ষে। মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সে ‘থর’ চরিত্রে তার শক্তিশালী উপস্থিতি তাকে দিয়েছে এক অনন্য পরিচিতি। কিন্তু বজ্রের দেবতা থেকে বাস্তব জীবনের ক্রিস হেমসওর্থের গল্প একেবারেই আলাদা-কখনো সংগ্রামী, কখনো অনুপ্রেরণাদায়ী, আর সবসময়ই মানবিক। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
১৯৮৩ সালের এই দিনে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে তার জন্ম। তবে তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় কেটেছে মেলবোর্ন আর নর্দান টেরিটরির মধ্যবর্তী ছোট্ট শহরগুলোতে।
-
বাবা ছিলেন সামাজিক সেবামূলক কাজে নিয়োজিত, আর মা ছিলেন একজন ইংরেজি শিক্ষিকা। সাধারণ একটি পরিবারে বেড়ে ওঠা ক্রিস ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি আর সমুদ্রের প্রেমে পড়েছিলেন।
-
অভিনয়ের প্রতি তার আগ্রহ তৈরি হয় স্কুল জীবনে। অস্ট্রেলিয়ান টেলিভিশন সিরিজ ‘হোম অ্যান্ড এওয়ে’ তে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়াই ছিল তার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। কয়েক বছর স্থানীয় টেলিভিশনে কাজ করার পর, ক্রিসের স্বপ্ন বড় হয় হলিউডে নাম করার।
-
২০১১ সালে মুক্তি পায় ‘থর’ যা ক্রিস হেমসওর্থের জীবনই বদলে দেয়। লম্বা চুল, গঠিত দেহ আর চার্মিং ব্যক্তিত্বে তিনি থর চরিত্রকে জীবন্ত করে তোলেন।
-
এরপর ‘দ্যা অ্যাভেঞ্জার’, ‘থর: রাগনারক’, ‘অ্যাভেঞ্জারস: ইনফিনিটি ওয়ার’ এবং ‘অ্যান্ডগেইম’ এর মতো সিনেমাগুলোতে তার অভিনয় মার্ভেল ভক্তদের মনে স্থায়ী আসন গড়ে তোলে।
-
যদিও বড় পর্দায় তিনি সুপারহিরো, বাস্তব জীবনে ক্রিস বেশি ভালোবাসেন সাগর, সার্ফিং আর পরিবারকে সময় দিতে।
-
স্ত্রী এলসা প্যাটাকি এবং তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি থাকেন অস্ট্রেলিয়ার বায়রন বে-তে।
-
হলিউডের চাকচিক্যের ভিড় থেকে দূরে তিনি বেছে নিয়েছেন প্রকৃতির সান্নিধ্য।
-
থর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ক্রিসকে নিতে হয়েছিল কঠোর ফিটনেস রেজিম। পরে সেটাই তার জীবনধারার অংশ হয়ে যায়। নিজের ফিটনেস অ্যাপ সেন্টার এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বজুড়ে ভক্তদের অনুপ্রাণিত করছেন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে।
-
ক্রিস মূলত সমুদ্র জীববিজ্ঞানী হতে চেয়েছিলেন শৈশবে। একসময় তিনি পরিবারের আর্থিক সংকট মেটাতে অভিনয় করাকে সিরিয়াসলি নিয়েছিলেন।
-
ফিল্ম সেটে সহকর্মীদের সঙ্গে তিনি বেশ মজার এবং প্রাণবন্ত যা মার্ভেল টিমের মধ্যে তাকে ‘মুড লিফটার’ বানিয়েছে।
-
মার্ভেলের বাইরে রুশ, এক্সট্রেকশন, টুয়েলভ স্ট্রং, ম্যান ইন ব্যাক: ইন্টারন্যাশনাল- এর মতো সিনেমায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে ক্রিস প্রমাণ করেছেন তিনি কেবল সুপারহিরো নন, একজন বহুমুখী অভিনেতা।
-
থর চরিত্র তাকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিলেও, বাস্তব জীবনের ক্রিস হেমসওর্থ আসলে একজন সাধারণ মানুষ।
-
বজ্রের দেবতার শক্তি হয়তো সিনেমায় সীমাবদ্ধ, কিন্তু অনুপ্রেরণার শক্তি তিনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন বাস্তব জীবনেই।