গ্ল্যামারের বাইরে এক জেদি মেয়ে জেনিফার লরেন্স
তাকে প্রথম দেখায় মনে হতে পারে আর দশজন হলিউড সুপারস্টারের মতোই চকমকে, হাস্যোজ্জ্বল এক নারী। কিন্তু ক্যামেরার পেছনের জেনিফার লরেন্স যেন একেবারেই ভিন্ন এক চরিত্র। তিনি কেবল রেড কার্পেটে হাঁটার জন্য তৈরি হননি। তৈরি হয়েছেন লড়াইয়ের জন্য সিনেমার সেটে, সমাজের রক্ষণশীল ভাবনায় আবার নিজের মনের ভেতরের দ্বিধাগুলোর বিপরীতেও। আজ তার জন্মদিনে যখন তাকে নিয়ে সারা দুনিয়ায় আলোচনা করে, তখন একটু ভিন্ন চোখে দেখা যাক এই ব্যতিক্রমী তারকাকে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
জেনিফার লরেন্স বড় হয়েছেন কেনটাকির লুইসভিলে। খুব ছোটবেলা থেকেই ক্যামেরার প্রতি তার আগ্রহ ছিল প্রবল। মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্কুল ফেলে দিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন অভিনয়ের পেছনে সময় দেবেন পুরোপুরি।
-
অনেকে তখন বলেছিলেন, ‘এ এক উন্মাদ সিদ্ধান্ত!’ কিন্তু এই ‘উন্মাদ’ সিদ্ধান্তই তাকে নিয়ে আসে হলিউডের সবচেয়ে দামি নামগুলোর কাতারে।
-
বিশ্ব তাকে চিনেছে ‘ক্যাটনিস এভারডিন’ হিসেবে এক বিদ্রোহী তরুণী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া এক প্রতীক। কিন্তু বাস্তবের জেনিফারও খুব একটা আলাদা নন।
-
অভিনয়ের শুরুতে তাকে বলা হয়েছিল তিনি ‘পর্যাপ্ত আকর্ষণীয় নন’। তার চেহারা, শরীর কিংবা কণ্ঠ কোনোটাই নাকি ‘স্ট্যান্ডার্ড’ নয়। কিন্তু তিনি নিজেকে বদলাননি। বদলে দিয়েছেন দর্শকদের দৃষ্টিভঙ্গি।
-
অনেকেই মনে করেন, হলিউড মানেই গ্ল্যামার আর মোহ। কিন্তু জেনিফার লরেন্স সেই মোহময় জগতের মাঝেও সোজাসাপটা কথা বলতে জানেন।
-
তিনি যৌনতাবাদ, সমান পারিশ্রমিক, নারীদের প্রতি হলিউডের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন। ২০১৫ সালে নিজের লেখা একটি ওপেন-এসে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি চাই, প্রতিভার ভিত্তিতে পারিশ্রমিক হোক। লিঙ্গের ভিত্তিতে নয়।’ এই লেখাটি সেসময় ঝড় তোলে গণমাধ্যমে, উদ্বুদ্ধ করে আরও অনেক নারী তারকাকে সরব হতে।
-
সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে একজন খাঁটি বোকাসোকা বলেন। অস্কার হাতে নিয়েও মঞ্চে পড়ে যাওয়া, খাবার নিয়ে উচ্ছ্বাস, ভুলভাল কথা বলে ফেলার মতো মুহূর্তগুলো তাকে আরও মানবিক করে তুলেছে। কারণ তিনি কখনো চেষ্টা করেননি নিখুঁত হওয়ার। বরং নিজের দুর্বলতাকেও আপন করে নিয়েছেন। আর এই সত্যতাই তাকে আলাদা করে তোলে।
-
তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জল্পনা কল্পনা অনেক। তবে ২০১৯ সালে আর্ট গ্যালারির ডিরেক্টর কুক ম্যারোনিকে বিয়ে করে অনেকটাই নিজেকে মিডিয়ার আলো থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। মাতৃত্ব গ্রহণের পর তার কথায় পাওয়া যায় অন্যরকম প্রশান্তির ছোঁয়া। তিনি বলেন, ‘আমি এখন বুঝি ক্যারিয়ার নয়, মানুষ হওয়াটাই আসল।’