অভিনয়ে শূন্য অভিজ্ঞতা নিয়েই হলিউডে রাজত্ব তার
হলিউডে সাফল্যের পথ অনেক দীর্ঘ আর কণ্টকাকীর্ণ। কিন্তু খুব কম মানুষই আছেন, যারা প্রথম ছবিতেই দর্শকের হৃদয় জয় করে নিতে পেরেছেন। ক্যামেরন ডিয়াজ সেই বিরল নামগুলোর একটি। শূন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে সিনেমায় পা রাখলেও, ১৯৯৪ সালের ‘দ্য মাস্ক’ দিয়েই তিনি হয়ে ওঠেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আজ সেই ক্যামেরনের জন্মদিন। ৫৪ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে তিনি যেমন এক ঝলমলে তারকা, তেমনি সংগ্রামী জীবনের এক অনুপ্রেরণাময় গল্পও বয়ে বেড়াচ্ছেন। ১৯৭২ সালে জন্ম নেওয়া এই তারকা তিন দশকের বেশি সময় ধরে দর্শকের মন জয় করে আসছেন, কখনো আলোচনায়, কখনো বা বিতর্কে। জন্মদিনে চলুন জেনে নেওয়া যাক তাঁর জীবনের কিছু অজানা অধ্যায়। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
ক্যামেরনের জীবনের শুরুটা কিন্তু সহজ ছিল না। কৈশোরেই তিনি বুঝেছিলেন জীবন সবসময় মসৃণ পথে হাঁটে না। মাত্র ১৮ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের সময় অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে গুরুতর বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছিলেন তিনি। সে অভিজ্ঞতা তাকে একবারে বদলে দেয়, জীবনকে নতুনভাবে ভাবতে শেখায়।
-
কোনো অভিনয় অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২১ বছর বয়সে প্রথমবার ক্যামেরন হাজির হন সিনেমার অডিশনে। ছবির নাম ছিল ‘দ্য মাস্ক’। অডিশন পেরিয়ে তিনি নির্বাচিত হলেও, বুঝতে পারেন অভিনয় কতোটা চ্যালেঞ্জিং। তাই নিয়মিত প্রশিক্ষণ শুরু করেন। ভাগ্যের দরজা যেন হঠাৎ করেই খুলে যায় তার জন্য। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া সেই সিনেমাটি বছরের সর্বাধিক আয় করা ছবিগুলোর একটি হয়ে ওঠে। আর ক্যামেরনও রাতারাতি পরিচিত হয়ে যান দর্শকের কাছে।
-
শুরুতেই সাফল্যের স্বাদ পেলেও, প্রকৃত শীর্ষে পৌঁছাতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। প্রেম, সম্পর্ক, আলোচনার ভিড়ের মধ্য দিয়েও তিনি এগিয়ে গেছেন ধৈর্য নিয়ে।
-
অবশেষে ২০০২ সালে মার্টিন স্করসিস পরিচালিত ‘গ্যাংস অব নিউইয়র্ক’ তাকে এনে দেয় অন্য উচ্চতা। লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর সঙ্গে অভিনীত এ ছবিকে নিজের ক্যারিয়ারের মোড় ঘোরানো কাজ বলে মনে করেন তিনি নিজেই।
-
কেবল প্রতিভাই নয়, আবেদনময়ী উপস্থিতির জন্যও ক্যামেরন বারবার ছিলেন আলোচনায়। ক্যারিয়ার শুরুর মাত্র এক বছরের মাথায়ই অ্যাম্পিয়ার ম্যাগাজিনের ‘হানড্রেড সেক্সিয়েস্ট স্টারস’ তালিকায় উঠে আসেন তিনি। স্থান পান ১৩তম স্থানে।
-
১৯৯৮ সালে ‘ফিফটি মোস্ট বিউটিফুল’ তালিকায়ও জায়গা হয়েছিল তার নামের।
-
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ক্যামেরন ডিয়াজ অভিনয় করেছেন প্রায় ৬০টি সিনেমায়।
-
‘ভ্যানিলা স্কাই’, ‘দেয়ারস সামথিং অ্যাবাউট ম্যারি’, ‘চার্লিস অ্যাঞ্জেলস’, ‘মাই বেস্ট ফ্রেন্ডস ওয়েডিং’–এর মতো চলচ্চিত্র তাঁকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রার স্বীকৃতি। বাফটাসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারের মনোনয়ন ও সম্মাননা তার ক্যারিয়ারকে করেছে সমৃদ্ধ।
-
আজকের ক্যামেরন ডিয়াজ শুধু একজন অভিনেত্রী নন, তিনি এক সংগ্রামী নারী, যিনি জীবনের প্রতিটি ধাপ থেকে শিখেছেন এবং বারবার নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তুলেছেন। তার গল্পে তাই অনুপ্রেরণার রঙ, সাফল্যের ঝলক আর জীবনের গভীর শিক্ষা-সবই আছে।