হলিউডের বিদ্রোহী নায়ক মিকি রুর্ক
হলিউডের ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে, যাদের জীবনকাহিনী সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। তেমনই এক নাম মিকি রুর্ক। আজ তার জন্মদিন। অভিনয়জগতে দাপট, রিংয়ে মুষ্টিযোদ্ধার সাহস, ব্যক্তিগত জীবনের উত্থান-পতন-সব মিলিয়ে মিকির জীবন যেন সিনেমার ভেতর আরেকটা সিনেমা। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
১৯৫২ সালের এই দিনে নিউ ইয়র্কে জন্ম নেন ফিলিপ আন্দ্রে ‘মিকি’ রুর্ক জুনিয়র। শৈশবে খেলাধুলায় ঝোঁক ছিল প্রবল। কৈশোরে বক্সিংয়ের প্রতি অদম্য টান তাকে টেনে নেয় রিংয়ে। অল্প বয়সেই অপেশাদার বক্সার হিসেবে সাফল্য পান। তবে রিংয়ের ভেতরের যোদ্ধা একসময় অভিনয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন।
-
৭০ ও ৮০’র দশকে হলিউডে নতুন নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন মিকি। দিনার (১৯৮২), রুমবেল ফিশ (১৯৮৩), সাড়ে নাইন উইকস (১৯৮৬), এঞ্জেল হার্ট (১৯৮৭) একটার পর একটা সিনেমায় তিনি হয়ে ওঠেন ভিন্নধর্মী চরিত্রের প্রতীক। তার অভিনয়ে ছিল কাঁচা আবেগ, বিদ্রোহী স্টাইল আর গভীর তীব্রতা, যা দর্শকদের কাছে তাকে অনন্য করে তুলেছিল।
-
সিনেমায় জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকা অবস্থায় হঠাৎ আবার বক্সিংয়ে ফিরে যান মিকি রুর্ক। জীবনের সেই সিদ্ধান্ত তার কেরিয়ারের জন্য কঠিন মোড় নিয়ে আসে। রিংয়ের আঘাতে মুখমণ্ডল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা পরবর্তী জীবনে একাধিক অস্ত্রোপচারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিবর্তন তাকে অভিনয়ের মূলধারা থেকে খানিকটা দূরে সরিয়ে দেয়।
-
২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য রেসলার’ ছিল তার ক্যারিয়ারের পুনর্জন্ম। পতনের পর আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরিয়ে আনে এই সিনেমা। বয়স্ক এক কুস্তিগিরের চরিত্রে তার অভিনয় এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে তিনি গোল্ডেন গ্লোব জয় করেন এবং অস্কার মনোনয়নও পান।
-
মিকির জীবন শুধু গৌরবগাঁথায় ভরা নয়। ব্যক্তিগত জীবনে ভাঙাগড়া, নেশাজনিত সমস্যা, অস্ত্রোপচারজনিত শারীরিক পরিবর্তন-সব মিলিয়ে তিনি সবসময় আলোচনায় ছিলেন। তবুও তার ভেতরে ছিল এক অবিনাশী লড়াকু মনোভাব।
-
আজ তিনি শুধু একজন অভিনেতা নন, বরং জীবনের প্রতিটি ধাপে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়া এক যোদ্ধার প্রতীক। অভিনয়ের পাশাপাশি মিকি এখনও সক্রিয় সামাজিক মাধ্যমে, ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেন নিজের ভাবনা।