সৌন্দর্যের খোলস নয়, প্রাণবন্ত হাসিতেই হানিয়ার আসল জাদু
পাকিস্তানের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র জগতে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব তারকা দর্শকদের বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হানিয়া আমির। অল্প সময়ে নিজস্ব প্রতিভা, প্রাণবন্ত ব্যক্তিত্ব আর স্বাভাবিক অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন লাখো দর্শকের হৃদয়ে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
হানিয়া আমিরের অভিনয়ে আসা অনেকটা কাকতালীয় ঘটনা। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জানান’ ছবির মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। নবাগত হয়েও তার স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় দৃষ্টি কেড়েছিল নির্মাতা থেকে শুরু করে দর্শকের। ছবির সাফল্যের পাশাপাশি হানিয়া আমিরকে নতুন প্রজন্মের অন্যতম সম্ভাবনাময় মুখ হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়।
-
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকেও হানিয়া সমানভাবে জনপ্রিয়। ‘তিতলি’, ‘বিশরি রাহ গুজারিশ’, ‘আনা’, ‘মেরে হামসফর’ কিংবা সাম্প্রতিক ‘মুঝে পেয়ার হুয়া থা’-প্রতিটি নাটকেই তিনি ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরেছেন।
-
তার অভিনয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো চরিত্রের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। দর্শকের কাছে তিনি কেবল একজন সুন্দরী অভিনেত্রী নন, বরং গল্পের ভেতরে প্রাণ সঞ্চার করা একজন শিল্পী।
-
হানিয়ার ক্যারিয়ারে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, তিনি একঘেয়ে চরিত্রে সীমাবদ্ধ থাকতে চান না। কখনও তিনি স্বপ্নবাজ কিশোরী, কখনও প্রতিবাদী নারী, আবার কখনও প্রেমে দ্বন্দ্বে জর্জরিত মেয়ে-প্রতিটি ভূমিকায় তিনি নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করেছেন। এই বহুমুখিতা তাকে সমসাময়িক নায়িকাদের থেকে আলাদা করেছে।
-
শুধু জনপ্রিয়তা নয়, সমালোচকরাও হানিয়া আমিরের অভিনয় দক্ষতাকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছেন।
-
বিশেষ করে ‘মেরে হামসফর’ নাটকে তার চরিত্র ‘হালা’ পাকিস্তান থেকে শুরু করে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য এমনকি বাংলাদেশের দর্শকের কাছেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। নাটকটির সংলাপ, আবেগ আর তার অভিনয় অনেক দর্শককে মুগ্ধ করেছে।
-
হানিয়া শুধু টেলিভিশনেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। তিনি সমানভাবে কাজ করছেন চলচ্চিত্র ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে। তার ঝুলিতে রয়েছে ‘পরওয়াজ হ্যায় জুনুন’, ‘নায়াতি’ এবং বিভিন্ন টেলিফিল্ম। ডিজিটাল যুগে দর্শকের চাহিদা যেভাবে বদলাচ্ছে, হানিয়া সেই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
-
হানিয়া আমির কেবল একজন অভিনেত্রী নন, বরং পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মের জন্য ফ্যাশন ও জীবনধারার আইকন। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে বিপুল অনুসারী।
-
প্রাণবন্ত হাসি, স্বাভাবিক আচরণ আর নিজের মতো করে বাঁচার স্বাধীন মানসিকতা তাকে অনন্য করেছে।
-
অভিনয় জীবনের শুরু থেকে হানিয়া বারবার প্রমাণ করেছেন যে তিনি ভিন্নধর্মী কাজ করতে চান। প্রতিটি চরিত্রে নতুনত্ব খুঁজে পাওয়া যায় তার অভিনয়ে। তাই পাকিস্তানি নাটক ও চলচ্চিত্র শিল্পের আগামী দিনে হানিয়া আমিরকে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে-এমন প্রত্যাশা দর্শক ও সমালোচকদের সবারই।