প্রতিদিন কমলা খেলে কী হয়
রোজকার খাবারের তালিকায় একটি ফল যোগ করতে চাইলে কমলা হতে পারে সহজ ও সাশ্রয়ী পছন্দ। টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফল শুধু জিভের স্বাদই বাড়ায় না, শরীরের ভেতরেও ঘটায় নানামুখী ইতিবাচক পরিবর্তন। কিন্তু প্রতিদিন কমলা খেলে আসলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়ে? ভালো দিকের পাশাপাশি কি কোনো সতর্কতার প্রয়োজন আছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
কমলা ভিটামিন ‘সি’-এর সেরা উৎস। নিয়মিত কমলা খেলে শরীরে ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণ হয়, যা সাদা রক্তকণিকার কার্যকারিতা বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে। ফলে সর্দি-কাশি, ভাইরাল জ্বর কিংবা মৌসুমি সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
-
ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে ভিটামিন ‘সি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন কমলা খেলে ত্বক হয় মসৃণ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। বলিরেখা, বয়সের ছাপ পড়তে দেরি হয় এবং রোদে পোড়া বা দূষণের ক্ষতিও কিছুটা কমে।
-
কমলায় থাকা প্রাকৃতিক আঁশ বা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি কমলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, অন্ত্র পরিষ্কার থাকে এবং গ্যাস বা অস্বস্তির সমস্যা হ্রাস পায়। এছাড়া কমলার উচ্চ জলীয় উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দিতে সহায়তা করে। এতে লিভার ভালোভাবে কাজ করতে পারে এবং শরীর ভেতর থেকে সতেজ থাকে।
-
কমলায় থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। একই সঙ্গে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত কমলা খেলে হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমতে পারে।
-
ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে কমলা হতে পারে ভালো সহচর। এতে ক্যালরি কম, কিন্তু ফাইবার বেশি—যা দীর্ঘ সময় পেট ভরা অনুভূতি দেয়। এতে অকারণে বেশি খাওয়ার প্রবণতা কমে।
-
কমলায় থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের জন্য উপকারী। নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং বয়সজনিত চোখের সমস্যা কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করা সম্ভব। এছাড়া কমলায় থাকা প্রাকৃতিক সুগন্ধ ও ভিটামিন ‘সি’ মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত কমলা খেলে ক্লান্তি কম অনুভূত হয় এবং মন ভালো থাকে।
-
কমলা প্রাকৃতিক চিনি হলেও এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলক কম। তাই পরিমিত পরিমাণে কমলা খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাধারণত নিরাপদ। তবে অতিরিক্ত কমলার রস পান করা এড়িয়ে চলাই ভালো।
-
সব ভালো জিনিসের মতো কমলাও অতিরিক্ত খেলে সমস্যা হতে পারে। যেমন- বেশি কমলা খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়তে পারে, দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে। যাদের গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে অস্বস্তি হতে পারে।