বর্ষায় চুলের যত্ন নিতে জানেন তো সঠিক নিয়ম?
বৃষ্টি নামলেই কারও কারও মনে ভেসে ওঠে ভেজা রাস্তায় হেঁটে চলার রোমান্টিক দৃশ্য। আবার অনেকে তো ইচ্ছা করেই ভিজে যান। কিন্তু জানেন কি, সেই ভেজা চুলের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে নানা ধরনের সমস্যা? কারণ শহরের বৃষ্টির পানি চুলের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়। বরং এতে থাকা দূষিত উপাদানগুলো চুল ও স্ক্যাল্পের মারাত্মক ক্ষতি করে। তাই বর্ষাকালে চুলের প্রতি দরকার একটু বাড়তি যত্ন। নিচে দেওয়া হলো এমন কিছু পরামর্শ, যেগুলো অনুসরণ করলে এই মৌসুমেও চুল থাকবে স্বাস্থ্যবান ও প্রাণবন্ত। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
বৃষ্টির জল মানেই ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শ। শহরের আকাশে জমে থাকা ধুলাবালি, ধোঁয়া ও বিভিন্ন গ্যাস যখন বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে মিশে নামে, তখন তা একধরনের অ্যাসিড রেইন বা দূষিত পানি তৈরি করে। এই পানি চুলে পড়লে স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক পিএইচ ব্যালান্স নষ্ট হয়ে যায়, চুলের ঔজ্জ্বল্য ও প্রাণ হারাতে থাকে, কিউটিকল দুর্বল হয়ে চুল ফ্রিজি ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে, খুশকি ও চুলকানি বেড়ে যেতে পারে। এই কারণে হঠাৎ করে রাস্তায় বা ছাদে দাঁড়িয়ে ভিজে যাওয়া চুলের পক্ষে একদমই ভালো নয়।
-
বৃষ্টিতে চুল ভিজে গেলে বাড়ি ফিরে তা শুকনো না করে অপেক্ষা করা ঠিক নয়। বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুল পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে হালকা গরম পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। চুল পরিষ্কারের সময় ব্যবহার করুন সালফেট-মুক্ত হালকা শ্যাম্পু, যা স্ক্যাল্প পরিষ্কার করলেও প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয় না। শ্যাম্পুর পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। বিশেষ করে হাইড্রেটিং কন্ডিশনার, যা চুলকে আর্দ্র রাখে ও ফ্রিজ কমায়। ভেজা চুল মোছার সময় শক্ত করে ঘষবেন না। বরং মৃদু তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে পানি ঝরিয়ে ফেলুন। হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলে সেটিং রাখুন ‘কুল’ মোডে।
-
বর্ষাকালে চুলে স্টাইল করতে গিয়ে অধিক হিট বা কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে চুল আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বরং চেষ্টা করুন মিনিমাল হেয়ারস্টাইল রাখতে সিম্পল পনিটেইল, বুন বা ব্রেইড করলে চুলে ঘর্ষণ কম হয়, চুল উন্মুক্ত না রেখে বাঁধলে ফ্রিজি ভাবও কমে, হিউমিড কন্ডিশনে হেয়ার ফ্রিজ কমাতে অ্যান্টি-ফ্রিজ সিরাম বা লিভ-ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন, সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করুন ক্ল্যারিফাইং শ্যাম্পু-যা জমে থাকা ধুলাবালি ও স্টাইলিং প্রোডাক্ট পরিষ্কার করতে সহায়ক।
-
বর্ষাকালে প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে স্ক্যাল্পের স্বাভাবিক তেল উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে। তাই সপ্তাহে ২-৩ বার হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করাই যথেষ্ট। পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত একবার চুলে গভীর কন্ডিশনিং মাস্ক ব্যবহার করুন যা চুলের ভেতরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে। যদি অতিরিক্ত চুল পড়া, চুলকানি বা খুশকির সমস্যা হয়, তবে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
-
চুল যেন বর্ষার হঠাৎ বৃষ্টির শিকার না হয়, সে জন্য সবসময় সঙ্গে রাখুন একটি স্কার্ফ বা ছাতা। চুলে অপ্রয়োজনীয় প্রোডাক্ট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। চুল ও স্ক্যাল্পের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য রক্ষায় যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক উপায়ে যত্ন নিন।