ধান না পেয়ে দিশাহারা কৃষক
ধানের বীজ রোপণের পরই চারা গাছে ধরেছে শীষ। স্বল্প সময়ে ধানের ফলন আসায় কৃষিতে বিপ্লব হওয়ার কথা থাকলেও, সেটাই কাল হয়েছে কৃষকের কপালে। নিম্নমানের ধানের বীজে আগেই চারা গাছে শীষ ধরায় এ বছর ধানের ফলন কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। এতে ক্ষতির পরিমাণ অর্ধকোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ছবি: নুরুল আহাদ অনিক
-
গত বছর ‘সাউথ এশিয়ান সিডস’ কোম্পানির উচ্চ ফলনশীল বি.আর-২২ জাতের ধানের বীজ রোপণ করে ভালো ফলন পান পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের বাদুরতলা গ্রামের কৃষকরা। তাই চলতি বছরও পাথরঘাটার বীজ ডিলার নাসির উদ্দিন সরদারের কাছ থেকে একই জাতের বীজ কিনে জমিতে রোপণ করেন তারা। বীজ রোপণের ১৫-২০ দিন পর বীজতলা থেকে চারা তুলতে গিয়ে দেখা যায় সব চারায় শীষ এসে গেছে। তিন মাস আগেই শীষ ধরলেও সেসব অপরিপক্ব ধানে ফলন এসেছে কম, অধিকাংশ শীষেই ধরেছে চিটা।
-
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, নিম্নমানের বীজের কারণে প্রায় ৯০ একর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে, ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
-
কৃষকদের অভিযোগ, কুরা প্রতি অন্তত ৪০ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হলেও তাদের দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা করে। তাই যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি তাদের।
-
বিস্তীর্ণ জমিতে দোল খাচ্ছে সবুজ ফসল। স্বল্প সময়ে বীজে ধান আশায় খুশি হওয়ার কথা থাকলেও মলিন মুখ আর হতাশা নিয়ে বসে আছেন কৃষকরা। আশপাশের সব জমির ধানে ফসল এলেও বিবর্ণ শুধু সাউথ এশিয়ান সিডস কোম্পানির উচ্চ ফলনশীল বি.আর-২২ জাতের ধানের ফসল।
-
উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান বলে প্রতারণার অভিযোগ তুলে সাকিব নামের এক কৃষক বলেন, পাথরঘাটা এলাকার ডিলার নাসির সরদার আমাদেরকে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের কথা বলে ‘সাউথ এশিয়ান সিডস’ কোম্পানির বি.আর-২২ জাতের ধানের বীজ দিয়েছে। জমিতে রোপনের পরই সমস্যা দেখা দিলে তাদের জানানো হলেও বিভিন্ন ছালচাতুরির আশ্রয় নেয়। ক্ষতিপূরণের কথা বলে আমাদের ৫ হাজার টাকা করে কুড়া প্রতি খরচ দিয়েছে। অথচ আমাদের রোপণে খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকার বেশি।
-
পাথরঘাটা উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হিমেল আল ইসলাম বলেন, কৃষকের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। পরে ডিলারকে তিন দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দিই।
-
পরবর্তীতে ডিলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৬৩ শতাংশ জমির অনুকূলে ৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন। পরে কৃষক এবং ডিলার উভয়ই একটি সন্তুষ্টিপত্র দিয়ে আমাদের কাছ থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে।