কোর্টে দাপিয়ে বেড়ানো এক পোলিশ বিস্ময়ের নাম ইগা সিওনতেক
টেনিস দুনিয়ার আজকের অন্যতম প্রতিভাবান নাম ইগা সিওনতেক। তরুণ এই তারকার খেলার শৈলী যেমন নান্দনিক, তেমনি তার মনোভাব অবিচল। বয়সে কম হলেও অর্জনের তালিকায় অনেক সিনিয়র তারকাকেও পেছনে ফেলেছেন তিনি। পোল্যান্ডের গর্ব, বিশ্বের টেনিস কোর্টে এক উজ্জ্বল আলো ইগা। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
২০০১ সালের এই দিনে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে তার জন্ম। ইগার বাবা তোমাস সিওনতেক ছিলেন একজন ক্রীড়াবিদ এবং ১৯৮৮ সালের সিউল অলিম্পিকে রোয়িংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। মা ডক্টর দরোতা সিওনতেক পেশায় একজন অর্থোডন্টিস্ট। পরিবারের এই ভারসাম্যপূর্ণ পেশাগত পরিবেশে বেড়ে উঠলেও ইগার ঝোঁক ছোটবেলা থেকেই ছিল ক্রীড়াক্ষেত্রে।
-
শিক্ষার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি বিশেষ আগ্রহ গড়ে ওঠে ইগার। প্রাথমিক পর্যায়ে সাঁতার শিখলেও খুব দ্রুতই টেনিসে আগ্রহ জন্মে। তার বড় বোন আগাতা সিওনতেকের দেখাদেখি তিনি টেনিস হাতে তুলে নেন। শুরুতে কিছুটা অনিচ্ছা থাকলেও পরে খেলাটির কৌশল ও প্রতিযোগিতার প্রতি ভালোবাসা গভীর হতে থাকে।
-
ইগা পড়াশোনা করেছেন পোল্যান্ডের একটি স্পোর্টস স্কুলে, যেখানে ক্রীড়া ও শিক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা হয়। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন পড়াশোনায় ভালো, কিন্তু টেনিসই ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে তার জীবনের মূল লক্ষ্য।
-
ইগা তার পেশাদার টেনিস ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০১৬ সালে। তবে টেনিস বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন ২০২০ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেন জয় করার মধ্য দিয়ে। মাত্র ১৯ বছর বয়সে গ্র্যান্ড স্লাম জিতে নেওয়া এই তরুণী ছিলেন প্রথম পোলিশ খেলোয়াড় যিনি কোনো একক গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন।
-
তার খেলার ধরন একটু ভিন্ন। বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল, নিখুঁত ফোরহ্যান্ড, দুর্দান্ত রিটার্ন এবং মানসিক দৃঢ়তা তাকে টেনিস বিশ্বের এক ভয়ংকর প্রতিপক্ষ করে তুলেছে। প্রতিপক্ষকে কৌশলে ফাঁসাতে তিনি কখনো ব্যাকহ্যান্ডে ভরসা রাখেন, কখনো সার্ভ-অ্যান্ড-ভলিতে চমকে দেন।
-
২০২২ সালের জুনে তিনি প্রথমবারের মতো ডব্লিউটিএ র্যাংকিংয়ের এক নম্বরে ওঠেন। এরপর একটানা ৭০ সপ্তাহ শীর্ষস্থানে থাকার রেকর্ড গড়েন, যা গত দশকের অন্যতম বড় সাফল্য।
-
২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি চারটি ফ্রেঞ্চ ওপেন (২০২০, ২০২২, ২০২৩, ২০২৪) এবং একটি ইউএস ওপেন (২০২২) জিতেছেন।
-
ইগা শুধুই অ্যাথলেট নন, বরং মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার পক্ষে কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তায় নিজের খেলার মান উন্নত করেছেন এবং গণমাধ্যমে এ নিয়ে স্পষ্টভাবে কথা বলেছেন। এতে তরুণ ক্রীড়াবিদদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হয়েছে।
-
ব্যক্তিজীবন আড়ালে রাখতে পছন্দ করেন তরুণ এই তারকা।
-
ইগা একাধারে পোল্যান্ডের ক্রীড়া-সংস্কৃতির প্রতীক, তরুণ প্রজন্মের আইডল এবং নারীদের ক্ষমতায়নের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।