নারী শক্তির প্রতীক, রিংয়ের জাদুকরী জেড কারগিল
মঞ্চে ঢুকলেই চারদিক থমকে যায়। দর্শকরা মুহূর্তেই চিৎকারে ফেটে পড়ে। তার উপস্থিতিতে যেন নারীদের আত্মবিশ্বাস আরও একধাপ উঁচুতে উঠে যায়। বলছি জেড কারগিলের কথা। রেসলিং রিংয়ে তার নাম মানেই বিদ্যুৎ গতির আঘাত, দমবন্ধ করা দৃঢ়তা আর নারীত্বের বিজয়গাথা। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
১৯৯২ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের গাইন্সভিল শহরে তার জন্ম। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, স্পোর্টি ও স্বাধীনচেতা। স্কুলজীবনেই তার শরীরচর্চা এবং ক্রীড়া প্রতিভা চারপাশে আলোড়ন তুলেছিল।
-
তিনি ‘সেব্রিং হাই স্কুল’ থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করেন এবং সেখানে বাস্কেটবল খেলায় বিশেষ পারদর্শিতা দেখান। পরে তিনি ফ্লোরিডার ‘জ্যাকসনভিল ইউনিভার্সিটি’-তে অধ্যয়ন করেন এবং বাস্কেটবল খেলায় কলেজ দলের হয়ে কৃতিত্বের সাথে অংশ নেন।
-
খেলাধুলার প্রতি প্রবল টান থেকেই জেড বেছে নেন শারীরিক সক্ষমতার নতুন এক যুদ্ধক্ষেত্র ‘প্রো রেসলিং’। তবে তার যাত্রা এত সহজ ছিল না। রেসলিংয়ের জগতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব তখনো সীমিত ছিল। কিন্তু জেড ছিলেন অন্যরকম। আত্মবিশ্বাস, শারীরিক ফিটনেস ও নেতৃত্বগুণ-এই তিনে ভর করে তিনি নিজেকে তৈরি করেন।
-
রেসলিং শেখার জন্য তিনি ডব্লিউডব্লিউই’র কিংবদন্তি মার্ক হেনরি ও ডাস্টিন রোডস এর অধীনে প্রশিক্ষণ নেন। এছাড়াও তিনি ‘নাইটমেয়ার ফ্যাক্টরি’ নামের রেসলিং স্কুলেও ট্রেনিং করেন।
-
২০২০ সালে জেড কারগিল ‘অল এলিট রেসলিং’ এর মাধ্যমে প্রথমবার রেসলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। তার অভিষেক ম্যাচেই সবাই অবাক হন তার ফিটনেস, গতি ও রিং ডমিনেশনে।
-
২০২১ সালে অল এলিট রেসলিংয়ে অনুষ্ঠিত ‘টিবিএস ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট’ এ অংশ নিয়ে তিনি বিজয়ী হন এবং হন প্রথম টিবিএস ওমেন্স চ্যাম্পিয়ন। এই টাইটেল তিনি টানা ৫০টিরও বেশি ম্যাচ ধরে ধরে রাখেন যা অল এলিট রেসলিংয়ের ইতিহাসে এক অনন্য রেকর্ড।
-
জেড শুধু রেসলিং নয়, ফিটনেস ও ব্যবসায়িক দিকেও সমান দক্ষ। তিনি সাইকোলজি ও চাইল্ড সাইকোলজি বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছেন ‘জ্যাকসনভিল ইউনিভার্সিটি’ থেকে। পাশাপাশি তিনি একজন ফিটনেস মডেল, জিম ট্রেইনার এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার।
-
জেড কারগিল আজ শুধু একজন সফল ক্রীড়াবিদ নন, তিনি হলেন নারীর আত্মবিশ্বাস, লড়াই ও সাফল্যের জীবন্ত প্রতীক। তার গায়ের রঙ, শক্তিশালী গড়ন কিংবা সোচ্চার স্বভাব, সবকিছুই এক সময় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রমাণ করেছেন, নারীর সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক নয়, তা নিহিত তার সাহস, লড়াই আর অর্জনের মধ্যে।