দায়িত্বশীলতার অন্য নাম মনিশ পাণ্ডে
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে কিছু নাম আছে যারা পরিশ্রম, ধৈর্য আর প্রতিভা দিয়ে নিজেদের জায়গা তৈরি করেছেন। মনিশ পাণ্ডে তেমনই এক নাম। ১৯৮৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে জন্ম নেওয়া এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন। আজ তার জন্মদিনে ফিরে দেখা যাক তার ক্রিকেট-যাত্রার গল্প। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
মনিশ ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলায় দারুণ আগ্রহী ছিলেন। তার পরিবার বেঙ্গালুরুতে চলে গেলে সেখানেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়ে ওঠে। বেঙ্গালুরুর স্কুল ক্রিকেটে তিনি দ্রুত নজর কাড়েন। বয়সভিত্তিক দলে খেলতে খেলতে খুব অল্প বয়সেই জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন।
-
২০০৯ সালে আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলতে নামেন মনিশ। সেখানেই ইতিহাস তৈরি করেন তিনি। প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আইপিএলে সেঞ্চুরি হাঁকান। সেই সেঞ্চুরি যেন তার ক্রিকেট জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। রাতারাতি পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন মনিশ পাণ্ডে।
-
যতটা প্রত্যাশা তৈরি করেছিলেন, তত দ্রুত জাতীয় দলে সুযোগ পাননি মনিশ। তবে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় তার। এরপর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০১৬ সালের সিডনি ওয়ানডেতে অনবদ্য সেঞ্চুরি করে ভারতকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেন। সেই ইনিংস আজও ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে।
-
মনিশ পাণ্ডে তার মার্জিত ব্যাটিং, উইকেটের মধ্যে দৌড় ও চাপের মুহূর্তে শান্ত থাকার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। তিনি বড়সড় হিটার নন, তবে রান তোলার শিল্প জানেন। তার স্ট্রোক প্লে ও ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝে খেলার দক্ষতা তাকে দলের জন্য নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান বানিয়েছে।
-
২০২১ সালে ভারতীয় অভিনেত্রী আশ্রিতা শেঠির সঙ্গে মনিশের বিয়ে হয়। ক্রিকেট মাঠের বাইরে তিনি একেবারেই শান্ত, পরিবারকেন্দ্রিক মানুষ। ক্রিকেট ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখার দারুণ দক্ষতা রয়েছে তার।
-
মনিশ পাণ্ডের ক্যারিয়ার সবসময় সহজ ছিল না। নিয়মিত দলে জায়গা ধরে রাখা, চোট কাটিয়ে ফেরা-এসবই তার যাত্রার অংশ। তবে আইপিএল কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি সবসময়ই নিজের প্রমাণ রেখেছেন।
-
ভারতীয় ক্রিকেটের অনেক তরুণ ব্যাটসম্যান তার মতোই ধৈর্য, লড়াই আর দায়িত্বশীলতার গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়।
-
মনিশ পাণ্ডে হয়তো বিরাট কোহলি কিংবা রোহিত শর্মার মতো আলোচিত নন, তবে তিনি নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্রিকেটের পরিশ্রমী যোদ্ধাদের একজন। জন্মদিনে তার জন্য শুভকামনা, আগামী দিনগুলোতে যেন তিনি আরও অনেক ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলতে পারেন।