আধুনিক ক্রিকেটের কৌশলী জাদুকর রবিচন্দ্রন
ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে অফ স্পিনের নতুন সংজ্ঞা লিখে যিনি নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, তিনি রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ১৯৮৬ সালের এই দিনে চেন্নাইয়ে জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটার শুধু একজন বোলার নন, বরং তিনি ক্রিকেট মাঠের এক কৌশলী স্থপতি। ব্যাট, বল ও বুদ্ধিমত্তার দুর্দান্ত সমন্বয়ে অশ্বিনকে আধুনিক যুগের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বলা যায়। ছবি: রবিচন্দ্রনের ফেসবুক থেকে
-
শৈশব থেকেই অশ্বিন পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় মনোযোগী ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হয়েও ক্রিকেটের প্রতি তার অনুরাগ থেমে থাকেনি।
-
প্রথমদিকে মিডিয়াম পেসার হিসেবে খেলা শুরু করলেও পরবর্তীতে কোচের পরামর্শে অফ স্পিন বোলিংয়ে মনোনিবেশ করেন। এই পরিবর্তনই তার ভাগ্য বদলে দেয়।
-
২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় অশ্বিনের। শুরুর দিকেই তিনি ব্যাটিং ও বোলিং-দুই ক্ষেত্রেই কার্যকর প্রমাণিত হন। তবে আসল উত্থান ঘটে টেস্ট ক্রিকেটে।
-
ঘরের মাটিতে কিংবা বিদেশে, উইকেট আদায় করার অসাধারণ ক্ষমতা তাকে বিশ্বসেরা স্পিনারদের কাতারে বসিয়েছে।
-
টেস্টে দ্রুততম ৩০০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড তার দখলে। একাধিকবার তিনি আইসিসি বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন। ব্যাট হাতে টেস্টে সেঞ্চুরিও রয়েছে, যা তাকে প্রকৃত অর্থে অলরাউন্ডার হিসেবে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে।
-
অশ্বিন শুধু অফ স্পিনেই সীমাবদ্ধ নন; ক্যারম বল, ডুসরা, ভ্যারিয়েশন-সবকিছুতেই তিনি পারদর্শী। প্রতিটি ম্যাচে নতুন কিছু উপহার দেওয়ার মানসিকতা তাকে আলাদা করেছে। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের দুর্বলতা খুঁজে বের করে কৌশল সাজানোই তার আসল শক্তি।
-
চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সি গায়ে আইপিএলে প্রথম পরিচিতি পান অশ্বিন। এরপর পাঞ্জাব কিংস ও রাজস্থান রয়্যালসেও খেলেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে তামিলনাড়ুর হয়ে তার অবদান অসামান্য।
-
অশ্বিন মাঠের বাইরেও সমান জনপ্রিয়। স্ত্রী প্রীতি নারায়ণন ও দুই কন্যাকে নিয়ে তার পরিবার সুখী ও আলোচিত। ক্রিকেট ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা প্রশংসিত।
-
আজকের দিনে অনেক তরুণ স্পিনারই অশ্বিনকে অনুসরণ করে। তার মতো কৌশলী স্পিনার হয়তো ভারতীয় ক্রিকেটে বিরল। শুধু উইকেট শিকার নয়, খেলার ভেতর বুদ্ধির ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার ক্ষমতা তাকে আধুনিক ক্রিকেটের ‘কৌশলী জাদুকর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
-
রবিচন্দ্রন অশ্বিন শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, বরং তিনি ক্রিকেটীয় বুদ্ধিমত্তার প্রতীক। জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বলা যায়-ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে তার নাম অমর হয়ে থাকবে।