শ্রমজীবীদের ৬ মাস খাদ্য সামগ্রী দেয়ার দাবি বাম জোটের
ভিডিও কনফারেন্সে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় সভাটি শুরু হয়ে চলে শুক্রবার (১০ এপ্রিল) বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সভায় দেশের ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি, স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা, শ্রমজীবী-হতদরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, কৃষিতে সরকারের মনযোগহীনতা, ত্রাণ স্বল্পতা ও বিতরণে দুর্নীতি, দলীয়করণ, চুরি ও সংকট মোকাবিলায় সরকারের সমন্বয়হীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা থেকে দেশের শ্রমজীবী, হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও নিন্ম আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে আগামী ছয় মাসের খাদ্য বিনামূল্যে সরবরাহ করা, মধ্যবিত্তদের জন্য স্বল্প মূল্যে রেশনের দাবি জানান বাম জোটের নেতারা।
একই সঙ্গে সভায় করোনা সংকট মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ ও সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে বাম-গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সর্বদলীয় সভা করার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ১৩ এপ্রিল সকাল ১১টায় সেগুনবাগিচার স্বাধীনতা হলে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে।
বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা শহিদুল ইসলাম সবুজ ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক প্রমুখ।
বক্তব্যে বাম নেতারা বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ পৃথিবীর কোনো দেশের সরকারের এককভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি কোনো দেশ এককভাবেও এ সংকট মোকাবিলা করতে পারবে না। এ জন্য বৈশ্বিক পারস্পরিক সহায়তা প্রয়োজন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মত দিয়েছে। ফলে আমাদের দেশেও সরকার বা সরকারি দলের একার পক্ষে এ সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়। তাই আমরা শুরু থেকেই এ পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তি, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞদের ঐক্যবদ্ধ করে সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছি। কিন্তু সরকার এখনও আমাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়ায় পরিস্থিতি ক্রমাগত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
সভা থেকে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দ্রুত এ সংকট মোকাবেলায় সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সর্বদলীয় সভা আহ্বানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।
সভায় দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য খাদ্যশস্য মজুত বাড়ানো এবং আসন্ন বোরো মৌসুমে ধান কাটার জন্য কৃষি-শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিভিন্ন স্থানে যাতায়তের জন্য সরকারি উদ্যোগে ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে হাওরের ধান কাটার জন্য বিশেষ মনযোগ দেয়ার দাবি জানানো হয়।
মৎস্য, পোলট্রি, ডেইরি, কৃষি উৎপাদন এবং বিপণন বিশেষভাবে নিশ্চিত করার জন্য সভা থেকে দাবি জানানো হয়।
এফএইচএস/ এমএফ/পিআর