বাজেট প্রত্যাখ্যান মার্কসবাদী বাসদের
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী যে বাজেট প্রস্তাব পেশ করলেন, সেটি একটি গতানুগতিক বাজেট। এই বাজেটে করোনাকালের অভিঘাতে বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ও অর্থনৈতিক সংকটে পর্যুদস্ত জনগণের দুর্দশা লাঘবে কোনো নির্দেশনা নেই।
শুক্রবার (১২ জুন) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারির কারণে দুনিয়ার অন্যসব পুঁজিবাদী দেশের মতো আমাদেরও স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান খাতের ভঙ্গুর পরিস্থিতি যখন উন্মোচিত, তখন আশু সংস্কার ও পুনর্গঠনে কোনো বড় ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হলো না। সামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধি আসলে লোক দেখানো কৌশল ছাড়া কিছু নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘোষিত লক্ষ্য ও বরাদ্দ শুধু স্ববিরোধী নয়, এটা নির্লজ্জ প্রহসন। মহামারির কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ থেকেও সরকার কোনো শিক্ষা নেয়নি। তাই ধনিক শ্রেণীর স্বার্থে প্রণীত এ বাজেট আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি বলেন, দেশে মহামারি চলছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান খাত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমান বাজেটে এই খাতগুলোকে প্রাধান্য দেয়া জরুরি ছিল। কৃষিখাতে ২২ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে। ব্র্যাকের গবেষণা অনুযায়ী গত দেড় মাসে কৃষি খাতের ক্ষতি হয়েছে ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তাই কৃষিযন্ত্রে ভর্তুকি বাড়ানো হলেও এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য আরও বরাদ্দ প্রয়োজন ছিল।
মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের মাত্র ১১ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ খাতে ২৫ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার ব্যাপারে ছাত্রদের দাবি গ্রাহ্যই করা হয়নি।
তিনি বলেন, কর্মসংস্থান খাতেও বিশেষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বাংলাদেশে নতুন করে বেকার হয়েছেন প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। যারা মহামারিজনিত লকডাউনের কারণে বেকারত্বের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য কোনো ভাতার ব্যবস্থা করা হয়নি।
মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং সেই সঙ্গে অধিক গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পেনশন বাদে এই খাতে বরাদ্দ কতটুকু আছে বা গত বছরের তুলনায় কতটুকু বেড়েছে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। মহামারির কারণে নতুন করে হতদরিদ্র হয়েছেন প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ। নতুন করে অভাবীর তালিকায় যুক্ত মানুষদের জন্য বাজেটে কোনো বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়নি।
এফএইচএস/এমএফ/পিআর