সরকারের সমন্বয়হীনতার অভাবে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৪ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২১

সরকারের সীমাহীন উদাসীনতা ও সমন্বয়হীনতার কারণে করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। সেই সঙ্গে দলটি সারাদেশে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

শনিবার (১০ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন বলে রোববার (১১ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের সীমাহীন উদাসীনতা ও সমন্বয়হীনতার কারণে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হয়েছে। সরকার স্বাস্থ্য সেবায় যে ভয়াবহ দুর্নীতি করেছে তারই ফলশ্রুতিতে আজকে করোনায় চিকিৎসা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে সময়মত লকডাউন ঘোষণা না করে পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে সাহায্য করেছে। লকডাউন ঘোষণা করার পরও গণপরিবহন চালু করা, শপিংমল, দোকানপাট খুলে দেয়া এবং গার্মেন্টস চালু রাখা প্রমাণ করেছে, সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও সমন্বয়ের অভাবে জনগণের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

সভায় চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে মেকশিপট হাসপাতাল তৈরি করা, যথেষ্ট পরিমাণ বেড, অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ ও ভেন্টিলেটেরর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে৷ এছাড়া দিন আনে দিন খায়, মাঝারি, ছোট কলকারখানার শ্রমিক, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক, গণপরিবহন শ্রমিক, কৃষক এবং অপ্রতিষ্ঠানিক (ছোট ও ক্ষুদ্র) উদ্যোক্তদের ভাতা প্রদানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের মার্চ মাস হতে যথেষ্ট সময় হাতে পাওয়ার পরও সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বেড, অক্সিজেন, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর সংযোজন করতে সরকার ব্যর্থ হয়। উপরন্তু বসুন্ধরা ও মহাখালীতে যে জরুরি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয় যথাক্রমে ৩১ কোটি ও ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে, তা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং বসুন্ধরা ও মহাখালীর হাসপাতাল দুটি উধাও হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক ভাবে সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর হার ইতোমধ্যে জনগণের মধ্যে ভীতি ও আতংকের সৃষ্টি করেছে।

আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে যে লকডাউনের প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে দিন আনে দিন খায়, নিম্ন আয়ের মানুষ ও সব পেশার শ্রমিকদের ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয় সভায়।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে বাগেরহাট-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্যের মালিকানাধীন জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে যাওয়ায় প্রায় ৩৫ জনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এই ঘটনার দায়ী জাহাজের মালিক অথবা চালক কারও বিরুদ্ধেই মামলা না করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। অবিলম্বে মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় সংঘটিত ঘটনায় প্রায় ১১টি মামলায় ১৭ হাজার মানুষকে আসামি করায় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে সালথা থানায় চরম নির্যাতন চালানোর তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয় এবং নিরপেক্ষ তদন্ত অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয় সভায়।

বিএনপির পক্ষ থেকে জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ ও আইনজীবীর সমন্বয়ে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অবিলম্বে তদন্ত সম্পূর্ণ করে তার প্রতিদেন প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় করোনার মধ্যেও দেশব্যাপী বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে তাদের বাসাবাড়িতে, পাড়া-মহল্লায় অভিযান পরিচালনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এই গ্রেফতার, হয়রানি বন্ধ এবং গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমএসএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।