প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা থেকেই কাউন্টার টেররিজম


প্রকাশিত: ০৩:৩৫ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ ছিল গত এক যুগের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। উন্নত দেশে জঙ্গিবাদ দমনে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট থাকলেও বিশেষায়িত কোনো বাহিনী ছিল না বাংলাদেশে। নানা জল্পনা-কল্পনা ও চেষ্টার পর এ বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে গঠন করা হয় ‘কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট’-(সিটি)। পুলিশের এই ইউনিটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। সম্প্রতি ইউনিটটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেখান থেকে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হলো-

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি) গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। এরই অংশ হিসেবে সিটি গঠন করা হয়। আগে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এই কাজ করতো। আসামি ধরে মামলা করতো ও সব ধরনের মামলার তদন্ত করতো ডিবি। তবে সিটি একটি বিশেষায়িত বিভাগ। সন্ত্রাসবাদ দমনে সম্পূর্ণ ডেডিকেটেড বাহিনী এটি।

সিটির কাজের পরিধির বিষয়ে ইউনিট প্রধান বলেন, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গি অর্থায়ন, সাইবার স্পেস থেকে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতেই ইউনিটটি গঠন করা হয়েছে। জাল মুদ্রা, ফিন্যানশিয়াল ক্রাইম বন্ধে কাজ করবে সিটি। এছাড়াও জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক ইন্টেলিজেন্স কালেকশন, অভিযান পরিচালনা ও মামলা দায়ের করবে নবগঠিত এই বাহিনীটি।

ডিবি অনেক সময় রাজনৈতিক মামলার তদন্ত করতো। এই কাউন্টার টেররিজম কী এসব মামলার তদন্ত করবে? উত্তরে মনিরুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দমনে সিটি একটি বিশেষায়িত বাহিনী। সিটি রাজনৈতিক কোনো মামলা নিয়ে কাজ করবে না। এটা শুধু সন্ত্রাসবাদ নিয়েই কাজ করবে।

Monirul

নবগঠিত এই ইউনিটে কোন কোন পদ মর্যাদার পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন? জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অধীনে ৬শ` এর বেশি জনবল নিয়ে এই ইউনিট চালু হয়েছে। পুলিশের ১ জন উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), ১ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, ৪ জন উপ-কমিশনার (ডিসি), ১২ জন অতিরিক্ত ডিসি এবং ২০ জন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) কাজ করবেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ইউনিটটি অন্যান্য বাহিনীর গোয়েন্দাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। ইউনিটের সদস্যদের সর্বশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের এ ইউনিটটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা সামগ্রী ও প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি। ইউনিটের সদস্যদের দক্ষতা বাড়াতে দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ডিএমপি। মনিরুল ইসলাম বলেন, “সিটিতে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আলাদা ইউনিট করা হয়েছে। ইউনিটের সব সদস্যদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ধাপে ধাপে শতভাগ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।”

২০০৯ সাল থেকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গঠনের পরিকল্পনা করছে সরকার। অবশেষে ৬ বছর পর বিশেষায়িত এই বাহিনীটি গঠন করা হলো। ইউনিটের জন্য ইতোমধ্যে মিন্টো রোড গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে পৃথক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

এআর/জেইউ/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।