রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপির তথ্য সংগ্রহ কমিটি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২২ পিএম, ০৩ জুন ২০২৩

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের তথ্য সংগ্রহ কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। শনিবার সকালে নয়া পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

রিজভী বলেন, জনগণের টাকায় বেতনভুক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শেখ হাসিনা দলীয় চেতনায় তার ব্যক্তিগত লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করেছেন। তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে লিপ্ত না থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সশস্ত্র দলীয় ক্যাডার এবং সাজানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একযোগে নব্য নাৎসী বাহিনীর মতো ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের।

পুরো দেশকে নানা কালাকানুনের দেয়াল দিয়ে এক দম বন্ধ করা অবরুদ্ধ কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের আন্দোলন দমন করতে নিশিরাতের সরকার বিরোধী দল ও মতের ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে আসছে। বিরোধী দল এবং মতের মানুষের বিরুদ্ধে সারাদেশে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো নিয়ে পুনরায় জনগণকে হয়রানি করতে পুলিশকে মাঠে নামানো হয়েছে। এইসব অপকর্মে আদালতকেও ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত খুন, গুম ও গায়েবী/মিথ্যা মামলার শিকার নিরীহ নিরপরাধ বিএনপি নেতাকর্মী তথা আপামর ভুক্তভোগী জনসাধারণ দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করে আসছে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে এই প্রবণতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে-যা এরই মধ্যেই সুষ্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যারা এই অবিচার ও অমানুষিক অত্যাচারের শিকার ও ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তাদেরও আইনি সহায়তা তথা দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে যথাযথ আইনি প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়ার একটি তাগিদও বিএনপি অনুধাবন করছে।

আপনারা লক্ষ্য করেছেন, ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি দেশের অধিকাংশ এলাকায় অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে বিনা কারণে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকারী নাগরিকদের ওপর খুন, গুম, মিথ্যা মামলা, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে অর্থ আদায়সহ নানা ধরনের জঘন্য অনাচারে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। অথচ একটি গণতান্ত্রিক দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সেই দেশের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার।

তিনি বলেন, দেশে দেশে এ ধরনের শাসকরা মানবিক ও মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়। আর যারা এই কাজটি বাস্তবায়ন করে তারা মূলত: ফৌজদারী অপরাধ করে। গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলা, গুম, খুন, সহিংস আক্রমণ, অগ্নিসংযোগসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাধা দেওয়া ব্যক্তিদের তথ্যাদি সংগ্রহ যেমন সহিংসতায় লিপ্ত ব্যক্তিদের নাম ও ভিডিও-অডিও রেকর্ড, ফটোগ্রাফ ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণকল্পে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির একটি ‘তথ্য সংগ্রহ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি সংগৃহীত তথ্য পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে তা সংরক্ষণ করবেন।

দেশব্যাপী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ কমিটি

১। রুহুল কবির রিজভী-আহ্বায়ক
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব-বিএনপি
২। হাবিব উন-নবী খান সোহেল-সদস্য
যুগ্ম মহাসচিব-বিএনপি
৩। শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী-সদস্য
প্রচার সম্পাদক-বিএনপি
৪। মীর সরফত আলী সপু-সদস্য
স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক-বিএনপি
৫। আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল-সদস্য-সদস্য
সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটি-বিএনপি
৬। বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ-সদস্য
সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটি-বিএনপি
৭। আকরামুল হাসান-সদস্য
সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটি-বিএনপি
৮। মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী-সদস্য
সদস্য, (দপ্তরে সংযুক্ত) জাতীয় নির্বাহী কমিটি-বিএনপি
৯। ফজলুর রহমান খোকন-সদস্য
সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটি-বিএনপি
১০। ইকবাল হোসেন শ্যামল-সদস্য
সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটি-বিএনপি
১১। কামরুজ্জামান দুলাল-সদস্য
দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা)-যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি
১২। রফিকুল ইসলাম-সদস্য
সহ-সভাপতি, স্বেচ্ছাসেবক দল-কেন্দ্রীয় কমিটি
১৩। মো. মাহবুবুর রহমান-সদস্য
১৪। সালাহ উদ্দিন খান-পিপিএম-সদস্য

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ১৯ মে থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী মোট মামলা হয়েছে ১৫৭টি, গ্রেফতার ৭১০ জনের বেশি নেতাকর্মী, মোট আসামি প্রায় ৫৭৫০ এর বেশি নেতাকর্মী, আহত হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মী।

কেএইচ/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।