২৭ রাজনীতিবিদকে গ্র্যাজুয়েশন সনদ দিলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল

নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত ফেলোশিপ প্রোগ্রাম সফলভাবে সমাপ্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের ২৭ জন সিনিয়র রাজনীতিবিদকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে।
ইউএসএআইডি’র স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ প্রকল্পের আওতায় সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে তাদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের (ডিআই) সিনিয়র লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামে বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতারা এই ফেলোশিপে অংশগ্রহণ করেন।
কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের সিনিয়র পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্যে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতে নেতাদের নিজ এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও তরুণ রাজনীতিকদের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নে এই ফেলোশিপ সহায়তা করে থাকে।
আরও পড়ুন>> ‘সব দলের অংশগ্রহণ নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না’
এই গ্রাজুয়েশন কর্মসূচির ৮ম ক্লাসের গ্রাজুয়েশনকৃত ফেলোরা ২০২৩ সালের জুলাই থেকে গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলসমূহের ভূমিকা, দলীয় অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র, ক্যাম্পেইন ম্যানেজমেন্ট, ভোটদান প্রক্রিয়া এবং রাজনীতিতে নারীদের অন্তর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন।
গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানের সমাপনীতে অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান এবং ইউএসএআইডি’র রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা লুবাইন চৌধুরী মাসুম। এসময় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অফ পার্টি ডানা এল. ওল্ডস সিনিয়র ফেলোদের মাঝে সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের আশা করি। বাংলাদেশের রাজনীতি কতই না ভালো হতে পারতো, যদি পরস্পরের মতকে আমরা শ্রদ্ধা করতাম ও পরস্পরকে শত্রু হিসেবে না দেখে যদি শুধু প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখতাম ।
তিনি বলেন, আমরা ভিন্নমত ধারণ করলেও, ভিন্ন দল করলেও আমাদের উদ্দেশ্য একই। জনগণ চূড়ান্ত নির্ধারক যে কোন মতটা সঠিক। এক্ষেত্রে দলগুলোর মধ্যে কমন বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, আমাদের মধ্যে ভিন্নতা থাকলেও দেশকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে যে বিষয়গুলো আমাদের জন্য ক্ষতিকর তা একযোগে পরিহার করতে হবে। রাজনীতির সঙ্গে অন্য পেশার তুলনা হয় না উল্লেখ করে তিনি ফেলোদের প্রতি নারী সহকর্মীদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, অন্যান্য দলের চেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অধিক সংখ্যক নারী প্রতিনিধিত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন>> ‘বামেরা এবার কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না’
মার্কিন জনগণের অর্থে ইউএসএআইডি পরিচালিত হয় জানিয়ে ইউএসএআইডি’র রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা লুবাইন চৌধুরী মাসুম বলেন, তরুণ নেতাদের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের সাফল্যের পর ২০১৯ সাল থেকে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল সিনিয়র নেতাদের জন্য ফেলোশিপ অনুষ্ঠান চালু করে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক সিনিয়র নেতা এই গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।
সিনিয়র ফেলোদের অভিনন্দন জানিয়ে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এসপিএল প্রকল্পের চিফ অব পার্টি ডানা এল. ওল্ডস বলেন, অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। এখান থেকে নেওয়া শিক্ষা ফেলোদের নিজ নিজ এলাকায় তরুণ নেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। এর মাধ্যমে যদি নেতৃত্বে সামান্যতমও গুণগত পরিবর্তন আসে, সেটাই আমাদের বড় অর্জন হবে।
এসময় গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করা নেতাদের মধ্যে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়পুরহাট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম আজিজ ও জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান।
আইএইচআর/ইএ/জেআইএম