স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ভিসানীতি অসম্মানজনক: হানিফ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পশ্চিমা বিশ্ব যদি ষড়যন্ত্র করে অসাংবিধানিক পথ খোঁজার চেষ্টা করে তাহলে বাংলাদেশের মানুষ তা বরদাশত করবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। আপনারও (পশ্চিমা বিশ্ব) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান। তাহলে আপনাদের আর আমাদের পার্থক্য কোথায়? কোনো পার্থক্য নেই। তাহলে কেন নাটক করা হচ্ছ। ভিসানীতির আড়ালে যদি কোনো ষড়যন্ত্র হয় সেই ষড়যন্ত্র কীভাবে প্রতিহত করতে হয় আওয়ামী লীগ নেতাকমীরা সেটা ভালো করে জানে। একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য ভিসানীতি অসম্মানজনক।’
আরও পড়ুন: অপরাজনীতি ছাড়তে বিএনপিকে ৩৬ দিনের আলটিমেটাম কাদেরের
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আজমপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘নির্বাচনের দামামা বেজে গেছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন হতে পারে। দেশের মানুষ নির্বাচনমুখী। দেশ উন্নয়নে পথে এগিয়ে যাবে কি না আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফয়সালা হবে। ঠিক সেই সময়ে বিএনপি এবং তার দোসররা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য অশান্ত পরিবেশ তৈরির চক্রান্ত করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা জানে নির্বাচনে এলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসবে না। কারণ তারা ক্ষমতায় থাকতে একদিকে হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটপাট করেছে, আর আরেকদিকে হত্যা, সন্ত্রাস করেছে। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় এমপিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছিল। দেশকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদের চারণভূমি বানিয়েছিল। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করেছিল। যার কারণে দেশের মানুষ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্ষমতার বাইরে থাকতেও বিএনপি সহিংসতা করেছে। নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য সহিংসতা করেছিল। পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে জনগণের ধিক্কার পেয়েছে। এই সন্ত্রাসী দলকে দেশেট জনগণ আর কখনো গ্রহণ করবে না।’
হানিফ বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলন করছে কিন্তু তাদের নেতা কে? তাদের নেতা তারেক রহমান চুরি, সন্ত্রাস, লুটপাট ও হত্যার দায়ে দণ্ডিত হয়ে পলাতক। দেশের মানুষ কোনো চোর, সন্ত্রাসকে দেখতে চায় না বলে তারা এখন ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের পর কী করবে বিএনপি?
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নির্বাচন বানচাল করার চক্রান্তে সুশীল সমাজের কিছু মনুষ উসকানি দিয়ে কথা বলছেন। একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য ভিসানীতি অসম্মানজনক। কিন্তু সেই সময়েও তারা উসকানি দিচ্ছেন।’
মার্কিন ভিসানীতির অন্তরালে কী আছে জাতি জানতে চায় উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী। এই ভিসানীতির অন্তরালে যদি কোনো ষড়যন্ত্র থাকে তাহলে দেশবাসী তা কখনো বরদাশত করবে না।’
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজপথে থাকুন। নির্বাচন বানচাল করার পশ্চিমা অপতৎপরতা রুখে দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয় নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে।’
শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম এমপি। এছাড়া বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি।
এসইউজে/কেএসআর