দক্ষিণ আফ্রিকায় আশায় বুক বাঁধছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা

ফারুক আস্তানা
ফারুক আস্তানা ফারুক আস্তানা , দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২১
জোহানেসবার্গে বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান

করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও গত বছর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। দুই দফা শেষে গত সপ্তাহে লকডাউন শিথিল করায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বাধতে শুরু করেছেন।

যদিও করোনাকালে উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় বর্তমান বাজারে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটি দুই দফা লকডাউনে পড়ে, তবে শেষবারের লকডাউনে প্রথমবারের মতো টেকওয়ে, গোসারিশপ বন্ধ করে দেয়া হয়নি। এছাড়াও সিগারেট, কসমেটিক, হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স জাতীয় সকল ধরনের পণ্যের দোকান খোলা ও বিক্রি একেবারে নিষিদ্ধ করেনি দেশটি।

বিজ্ঞাপন

কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র অ্যালকোহল বিপণন পরিবহন নিষিদ্ধ করা ছাড়া বাকি সব ব্যবসা বাণিজ্য কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সুযোগ রেখেছে বিধি-নিষেধ ও শর্ত মেনে। এতে করে লকডাউনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদেরও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল।

২০২০ সালে অনেকেই বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল। তবে তারা আশা করছেন; করোনাকাল কেটে গেলে ২০২১ সালের বাকি সময়টায় ব্যবসা-বাণিজ্যে আবার সুদিন ফিরে আসবে। ঘুরে দাঁড়াতে নতুন বছর সহায়ক হবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি অভিবাসী ব্যবসায়ীদের মধ্যে বড় একটা অংশ গোসারিশপ ও টেকওয়ে, হার্ডওয়্যার, কসমেটিক, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা করে আসছেন দীর্ঘ সময় ধরে।

দেশটির জোহানেসবার্গ, প্রিটোরিয়া, কেপটাউন, ইস্টার্নপেকসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন এমন কয়েকজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়।

jagonews24

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জোহানেসবার্গে বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশি যুবক মুহাম্মদ সাহেদ। তিনি দেশটির ইস্টার্নপেক এলাকায় ছোট একটি দোকান দিয়ে একাই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। বাড়ি বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় আছেন আট বছর ধরে।

তিনি বলেন, চলমান লকডাউনের ফলে তার দোকানে বেচাকেনায় কোনো প্রভাব পড়েনি বরং আগের চেয়ে ব্যবসা বেড়েছে। যদিও সরকারের বিধিনিষেধ সম্পূর্ণ মেনে চলতে হচ্ছে। সাহেদ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিয়মিত দোকান খুলে ব্যবসা করছেন।

বিজ্ঞাপন

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে ব্যবসায়ী এমডি রফিক বলেন, প্রথমবার লকডানের সিগারেট বিক্রি বন্ধ হওয়ার কারণে বেচাকেনায় প্রভাব পড়েছিল। দৈনিক বিক্রির বড় একটা অংশ সিগারেট থেকে আসত। যা তখন বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। ব্যবসায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল। এবার তা হয়নি, এখন তো লকডাউন শিথিল করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য আবার আগের মতো জমবে আশা করছি।

প্রিটোরিয়া বাংলাদেশি মালিকানা একটি কসমেটিক ও ইলেকট্রনিক দোকানে দেড় বছর যাবত চাকরি করছেন নাজমুল হাসান রাজ। তিনি বলেন, লকডাউনে সরকারের নিয়মনীতি মেনে দোকান চালিয়ে নিচ্ছি।

এ বাংলাদেশি বলেন, এখন লকডাউনে বসে থাকতে হচ্ছে না, যা প্রথম লকডাউনের সময়ে সারাদিন দোকানের পেছনে স্টোর রুমে শুয়ে বসে দিন কাটাতে হয়েছিল। মালিক বলেছিল লকডাউনে যতদিন দোকান বন্ধ ততদিন বেতনও বন্ধ। আশা করছি এই সময়ে এসে আগের মতো আর হবে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দেশে মানুষের কাছ থেকে টাকা ধার করে সাউথ আফ্রিকায় এসেছি। সেই টাকা এখনো দিতে পারিনি। পরিস্থিতি যাই হোক কাজ করে দেশে ধার পরিশোধ করতে হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে রাসেল মোবাইলে জানিয়েছেন, ব্যবসা আগের মতোই আছে। করোনাভাইরাস, লকডাউনের কারণে আমার এলাকায় বেচাকেনায় তেমন একটা প্রভাব পড়েনি।

দক্ষিণ আফ্রিকাতে প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন। দেশটিতে করোনাভাইরাসে এই পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বাংলাদেশি মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে আরো বেশি কিছু প্রবাসী।

বিজ্ঞাপন

এমআরএম/এএসএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - jagofeature@gmail.com