করোনার টিকাদানে পর্তুগালের সাফল্যের গল্প
দক্ষিণ-পশ্চিম আইবেরীয় উপকূলের দেশ পর্তুগাল। দেশটিতে কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮১ ভাগই সম্পূর্ণভাবে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডিজিএসের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে পর্তুগালে ১০ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যার বসবাস, তার মধ্যে ৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন মানুষকেই সম্পূর্ণ ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে দেশটি।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, সারাবিশ্বে পর্তুগাল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশ দুটি সমান তালে তাদের নাগরিকদের সম্পূর্ণ ডোজ টিকা দিতে পেরেছে, যা যৌথভাবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ পর্তুগাল ২০২০ এর শুরুর দিকে করোনার তাণ্ডবে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং দেশটির সরকার তখন করোনার টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ জোরদান করায় খুব কম সময়ে সফলতা এসেছে তাদের। বর্তমানে দেশটিতে ৬৫ বছরের উপর বয়স্ক এবং ১২ থেকে ১৭ বছরের যুবকদেরও সম্পূর্ণ ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে।

বৈধ-অবৈধ অভিবাসী যারা এখনো দেশটিতে টিকা নেননি, তাদের ক্ষেত্রে নতুন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনলাইনে সাক্ষাতকারের মাধ্যমে টিকা নেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যে কেউ দেশটির নাগরিক কিংবা অভিবাসী দেশের অভ্যন্তরে যে কোনো টিকা কেন্দ্রে গেলেই সাময়িক সময়ের মধ্যেই বর্তমানে মিলছে করোনার টিকা।
এদিকে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করার বিধিনিষেধও তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার। তবে রেস্টুরেন্ট জিম সেন্টার কিংবা অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ে যেতে হলে দেখাতে হবে করোনার ডিজিটাল সার্টিফিকেট। বর্তমান টিকা নেয়ার ১৪ দিনের মাথায় অনলাইনে নাম, জন্মতারিখ, স্বাস্থ্যসেবার সংখ্যা, মুঠোফোনের সংখ্যা এবং মুঠোফোনে আসা ফিরতি কোড সংখ্যা সংযুক্ত করে অনলাইন থেকে কভিড-১৯ ডিজিটাল সনদ সংগ্রহ করা যায় খুব সহজেই।
পর্তুগালের ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল হেনরিক ডি গাউভিয়াই মেলো, লিসবনের একটি টিকাকেন্দ্রে পরিদর্শন করে বলেন, আমরা বিশ্বের মধ্যে টিকা প্রয়োগে কত সংখ্যায় আছি এক, দুই কিংবা তিন তা নিয়ে আমি কখনোই উদ্বিগ্ন নই। আমাদের ভবিষ্যতেও লক্ষ্য থাকতে হবে টিকার মাধ্যমে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে একই গতিতে টিকা দিতে শুরু করেছিল আমাদের দেশ, কিন্তু টিকাবিরোধী আন্দোলন ইউরোপীয় অন্যান্য দেশগুলোতে বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আমাদের লক্ষ্যে খুব দ্রুত পৌঁছাতে পেরেছি।
তিনি আরও যোগ করেন, আমরা ধনী দেশগুলোতে অতিরিক্ত টিকা দিচ্ছি, যেখানে দরিদ্র দেশগুলোতে শূন্য টিকা প্রয়োগ করা হয়, আমি এর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত হতে পারছি না। আমার কাছে এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে ও পড়ে না।
এমআরএম/এএসএম