লিবিয়ার মরুভূমি থেকে ৫ অভিবাসীর গলিত মরদেহ উদ্ধার
উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় মরুভূমি থেকে পাঁচজনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের সবাই অভিবাসী। বৃহস্পতিবার স্থানীয় এনজিওগুলো এই তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল। তবরুক শহরের দক্ষিণে অন্তত ৫৫০ কিলোমিটার দূরে ‘গ্রেট স্যান্ড সি’ নামের এলাকা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, উদ্ধারের পর মরদেহগুলো তবরুকে নিয়ে আসা হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, অভিবাসীদের মরুভূমি পাড়ি দেওয়ার যাত্রা কতটা ভয়াবহ হতে পারে, এই ঘটনা তারই একটা উদাহরণ। এটাকে বলা যেতে পারে ‘মৃত্যুপথযাত্রা’, বলছে রেড ক্রিসেন্ট।
লিবিয়ায় অভিবাসীদের মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহকারী স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ‘আবরিন’ জানিয়েছে, উদ্ধার করা গলিত মরদেহগুলো সম্ভবত সুদানের অভিবাসীদের। সংস্থাটি উদ্ধার অভিযানের কিছু ছবিও প্রকাশ করেছে।
উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার সঙ্গে ছয়টি দেশের সঙ্গে সীমান্ত ও ভূমধ্যসাগরের দীর্ঘ উপকূলরেখা রয়েছে। বাংলাদেশসহ এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ, সংঘাত, নিপীড়ন ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে ইউরোপে পৌঁছাতে চাওয়া অভিবাসীদের কাছে দেশটি একটি প্রধান ট্রানজিট পয়েন্ট।
ফলে দেশটিতে পৌঁছাতে এবং ইউরোপে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অভিবাসীদের স্থলপথ বা সমুদ্রপথে বিপজ্জনক যাত্রা করতে হয়। দেশের উপকূলে নৌকা ডুবে মৃত্যুর বিষয়টি যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে।
গত ডিসেম্বরে লিবিয়ার পশ্চিম উপকূলের জুওয়ারা শহরের কাছে অন্তত ৬১ জন অভিবাসী নৌকাডুবিতে মারা যান। সেই দলে নারী ও শিশুরাও ছিলেন।
কুফরা অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার পরিচালক ইব্রাহিম বেলহাসান জানিয়েছেন, মে মাসে চাদ সীমান্ত পেরিয়ে লিবিয়ার মরুভূমিতে একটি গাড়ি বিকল হয়ে পড়লে, সেই গাড়িতে থাকা ৩৪ জনের মধ্যে অন্তত সাত জন সুদানি অভিবাসী মারা গেছেন।
তিনি বলেন, ১১ দিন পর বালিয়াড়িতে তাদের খোঁজ পাওয়া যায়। ততোদিনে তাদের খাবার ও পানি শেষ হয়ে গেছিল বলেও জানান ইব্রাহিম।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের হিসাবে লিবিয়ায় বিভিন্ন দেশ, জাতি ও গোষ্ঠীর অন্তত সাত লাখ ৮৭ হাজার অভিবাসী ও শরণার্থী বসবাস করছিলেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, ২০২১ সালে লিবিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি দিয়েছে ৩২ হাজার চারশ শরণার্থী ও অভিবাসী। সংখ্যাটি ২০২০ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
এপ্রিলে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন প্রস্তাব দিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ‘ফ্রন্টেক্স’-এর জনবল ৩০ হাজারে উন্নীত করার। তিনি মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে ইউরোপের বাইরের সীমান্ত সুরক্ষা সহায়তা নিশ্চিত হবে।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস
এমআরএম/জিকেএস