যুক্তরাজ্য

প্রস্তাবিত অভিবাসন নীতি এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির ওপর প্রভাব

এস ইসলাম
এস ইসলাম এস ইসলাম , লন্ডন থেকে
প্রকাশিত: ০৬:৫৫ এএম, ০১ অক্টোবর ২০২৫
ছবি-এআই দিয়ে বানানো

যুক্তরাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ লেবার পার্টির সম্মেলনে অভিবাসন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই নীতির আওতায়, স্থায়ী বসবাসের (ইন্ডিফিনিট লিভ টু রিমেইন-আইএলআর) জন্য আবেদনকারীদের কঠোর শর্ত পূরণ করতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে ইংরেজি ভাষায় উচ্চমানের দক্ষতা, অপরাধমূলক রেকর্ড না থাকা, জাতীয় বিমায় অবদান রাখা এবং কমিউনিটিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা।

এই প্রতিবেদনে নতুন অভিবাসন নীতির গুরুত্ব এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির ওপর তার সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

নতুন অভিবাসন নীতির মূল দিকসমূহ

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) শাবানা মাহমুদ ভাষণে উল্লেখ করেছেন, অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে হলে তাদের কমপক্ষে ১০ বছর যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে হবে। এছাড়া আবেদনকারীদের ইংরেজি ভাষায় উচ্চমানের দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড থাকতে পারবে না।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে তাদের জাতীয় বিমায় অবদান রাখতে হবে এবং কমিউনিটিতে স্বেচ্ছাসেবক কাজের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে হবে। এই শর্তগুলো পূরণ না হলে আবেদনকারীদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি বাতিল হতে পারে। যারা এই শর্তগুলো পূরণ করবেন, তারা নিয়মিত প্রক্রিয়ার চেয়ে আগে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেতে সক্ষম হবেন।

বাংলাদেশি কমিউনিটির ওপর প্রভাব

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটি দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বিশেষ করে অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যের ‌‘ক্যারি ইন্ডাস্ট্রি’র মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তবে নতুন অভিবাসন নীতির আওতায় কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অর্জন অনেকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কারণ বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে অনেকেই এখনও উচ্চমানের ইংরেজি দক্ষতা অর্জন করেননি।

এছাড়া কমিউনিটিতে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করা অনেকের জন্য স্বাভাবিক হলেও এই কাজগুলোর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং নথিভুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে। অপরাধমূলক রেকর্ড থাকা ব্যক্তিদের জন্যও নতুন নীতির আওতায় স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়া কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

সম্ভাব্য সমাধান ও সুপারিশ

বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যদের জন্য নতুন নীতির আওতায় স্থায়ী বসবাসের অনুমতি সহজ করতে ভাষা শিক্ষা প্রোগ্রাম চালু করা যেতে পারে, যা ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। পাশাপাশি, কমিউনিটিতে করা স্বেচ্ছাসেবক কাজগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান এবং নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। অপরাধমূলক রেকর্ড থাকা ব্যক্তিদের জন্য আইনি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তারা নতুন নীতির আওতায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেতে সক্ষম হতে পারেন।

শাবানা মাহমুদের নতুন অভিবাসন নীতি যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশি কমিউনিটি এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। তবে যদি প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তবে কমিউনিটি সদস্যরা নতুন নীতির আওতায় স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেতে সক্ষম হবেন।

এমআরএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]