ফ্লোটিলায় থাকা ২৩ নাগরিককে নিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্বেগ
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (জিএসএফ)’-এর ৪১টি জাহাজ আটকে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসময় জিম্মি করা হয়েছে এসব জাহাজে থাকা ৪৪৩ জন অধিকারকর্মীকে। জিম্মি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মালয়েশিয়ার ২৩ জন নাগরিকও আছেন। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম। ঘটনাটিকে তিনি ‘মানবিক মূল্যবোধের পতন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এছাড়া আটক ব্যক্তিদের মুক্তি ও গাজায় সহায়তা পাঠানোর দাবিতে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
জানা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়া মালয়েশিয়ার নাগরিকদের মধ্যে গায়িকা হেলিজা হেলমি ও জিজি কিরানা, দেশটির প্রভাবশালী ব্যক্তি নুরুল হিদায়াহসহ বিভিন্ন জনপরিচিত মুখও রয়েছেন। জিম্মি নাগরিকদের বিষয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে দেশটির সরকার। এ বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম তুরস্ক, মিশর ও সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগের পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) কুয়ালালামপুরে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রায় ৫ হাজার মানুষ অংশ নেন। এসময় বিক্ষোভকারীদের গাজার পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে সমাবেশ থেকে তিনটি দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দাবিগুলো হলো- সব জিএসএফ কর্মীর অবিলম্বে মুক্তি, ত্রাণবাহী জাহাজ গাজায় প্রবেশের অনুমতি এবং শান্তি প্রক্রিয়াকে ইসরায়েলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা।
কুয়ালালামপুরের বাইরে দেশটির পেরাক, কেলান্তানসহ বিভিন্ন রাজ্যে একই দাবিতে সমাবেশ হয়েছে। দেশব্যাপী মসজিদগুলোতে বিশেষ দোয়া করা হয়। এসময় ফিলিস্তিনি জনগণ ও আটক কর্মীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর মার্কিন দূতাবাসের সামনে বড় সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে।
জিএসএফ-এর ৪৪টি জাহাজ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এসব নৌযানে বিশ্বের ৪৫টি দেশের ৫০০ জনেরও বেশি অধিকারকর্মী অংশ নেন। জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গ, হলিউড অভিনেত্রী সুসান সারান্ডন এবং নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলার মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদের সম্পৃক্ততা এই মিশনকে বৈশ্বিক মাত্রা দিয়েছে। এই নৌবহরে অংশ নেওয়া অধিকারকর্মীদের মধ্যে বাংলাদেশের শহিদুল আলমও রয়েছেন।
এমএমকে/জিকেএস